মশার উপদ্রব থেকে বাঁচার সহজ উপায়

মশা শুধু একটি বিরক্তিকর কীট নয়, বরং এটি বিভিন্ন রোগের বাহক হিসেবে পরিচিত। গ্রীষ্মকাল এলেই মশার উপদ্রব বাড়তে শুরু করে। এই সময়, বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে, মশার উপদ্রব মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে যায়। ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, জিকা, চিকুনগুনিয়া এই সব রোগের জন্য দায়ী হচ্ছে বিশেষ কিছু মশার প্রজাতি। বিরক্তিকর উপদ্রবের পাশাপাশি তারা রোগজীবাণু সংক্রামণ করে। এই মশা অনেক সময় মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

তাই, আমাদের উচিত এখন থেকেই মশার উপদ্রব নিয়ে সতর্ক হওয়া। মশা মারার স্প্রে, কয়েল, অ্যারোসল ব্যবহার করেও উপদ্রব থেকে রক্ষা পাওয়া তো যায়ই না উল্টো মারাত্মক ভাবে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। তাই, মশার উপদ্রব থেকে বাঁচার উপায় জানা আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এই ব্লগে আমরা মশার উপদ্রব, তাদের প্রকারভেদ, জীবনকাল, স্ত্রী ও পুরুষ মশার মধ্যে পার্থক্য, এবং মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা পাওয়ার সহজ কিছু উপায় নিয়ে আলোচনা করব।  

মশার উপদ্রব বাড়ার পেছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে। বিশেষ করে আবহাওয়া ও পরিবেশের পরিবর্তন মশার প্রজননের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে। গ্রীষ্ম ও বর্ষা মৌসুমে তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা বৃদ্ধি পায়, যা মশার জীবনচক্রকে ত্বরান্বিত করে। মশার উপদ্রব বৃদ্ধির অন্যতম কারণগুলো হলোঃ 

জলাশয় মশার প্রজনন ক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত। স্বচ্ছ জলাধারে মশা ডিম পাড়ে, যা পরে দ্রুত বেড়ে ওঠে। এই জলাশয়ে জমে থাকা পানি, পাতা ও অন্যান্য জৈব পদার্থ মশার জন্য আদর্শ পরিবেশ তৈরি করে। বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি জমে গিয়ে জলাশয়ের সংখ্যা বেড়ে যায়, ফলে মশার উপদ্রবও বৃদ্ধি পায়। অতিরিক্ত জলাশয়, পরিচ্ছন্নতার অভাব এবং কাদা মাটির উপস্থিতি মশার বৃদ্ধি এবং রোগের সংক্রমণকে সহজতর করে। এ কারণে মশার উপদ্রব থেকে বাচতে জলাশয়ের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অপরিহার্য।  

মশার উপদ্রব বাড়ার অন্যতম প্রধান কারণ হল পরিবর্তিত আবহাওয়া। বর্ষার মৌসুমে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত মশার প্রজননের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে। উচ্চ তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা মশার বংশবিস্তারে সহায়তা করে। এছাড়া উষ্ণ আবহাওয়ার মধ্যে মশার বংশবৃদ্ধি বৃদ্ধি পায়। তাই, আবহাওয়ার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সচেতনতা বাড়ানো জরুরি।

জীবনযাত্রার পরিবর্তন মশার উপদ্রব বৃদ্ধির প্রধান কারণ। শহরের দ্রুত নগরায়ন, স্থায়ী জলাধার সৃষ্টি এবং অব্যবস্থাপনা মশার বংশবিস্তারকে উৎসাহিত করে। মানুষের অব্যবস্থাপনা ও পরিচ্ছন্নতার অভাব, যেমন আবর্জনা ফেলে রাখা এবং জল জমে থাকা,যা মশার জন্য আদর্শ পরিবেশ তৈরি করে। এছাড়াও, জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও বর্ষা বাড়ার কারণে মশার প্রজনন বৃদ্ধি পায়। এসব কারণে মশার উপদ্রব বাড়ছে, যা মানবস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। 

বর্তমান সময়ে মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে পরিবেশগত পরিবর্তনের কারণে। জলবায়ু পরিবর্তন, তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং বৃষ্টিপাতের অভাব মশার প্রজনন বৃদ্ধিতে সহায়ক হচ্ছে। শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাব এবং নোংরা জল জমে থাকা স্থানগুলি মশার বংশবিস্তারের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করছে। এছাড়া, বনভূমি ধ্বংস ও নগরায়ণ মশার আবাসস্থল বৃদ্ধি করছে, যা তাদের বিস্তারকে আরো ত্বরান্বিত করছে। এই সব কারণ মিলিয়ে মশার উপদ্রব আমাদের স্বাস্থ্য এবং জীবনযাত্রায় গুরুতর প্রভাব ফেলছে।  

মশার উপদ্রব বাড়ার আরো একটি প্রধান কারণ হলো মশা প্রতিরোধক উপকরণের অভাব। শহর ও গ্রামে অনেক পরিবারে মশা তাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, স্প্রে বা মশারি নেই। ফলে মশার উপদ্রব বেড়ে যায়, যা ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া মতো রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। মশার বংশবিস্তারে প্রতিরোধক উপকরণের ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি। সঠিক সময়ের মধ্যে মশা প্রতিরোধের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে, আমাদের স্বাস্থ্য ও জীবনমানের উপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। 

বাংলাদেশে ডেঙ্গু মশার উপদ্রব সাধারণত বর্ষা মৌসুমে বাড়ে। কিন্তু গ্রীষ্মের কিছু সময়ও তাদের উত্থানের জন্য সহায়ক হতে পারে। এই সময় বৃষ্টি হওয়ার কারণে বিভিন্ন জায়গায় পানি জমে যায়, যা মশার বংশবিস্তারকে সহায়তা করে। সাধারণত জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত বর্ষার পরিমাণ বেশি থাকে এবং এই সময় আবহাওয়া গরম ও আর্দ্র থাকে, যা মশার প্রজননের জন্য অত্যন্ত অনুকূল। বর্ষা মৌসুমে সাধারণত ২৫ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং ৭০%-এর বেশি আর্দ্রতা তাদের বংশবৃদ্ধির জন্য আদর্শ। এছাড়া, রাতে ও ভোরের সময় মশা বেশি সক্রিয় থাকে, তাই এই সময়টা আমাদের জন্য বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। 

মশার মধ্যে স্ত্রী ও পুরুষ মশার মধ্যে কিছু মৌলিক পার্থক্য রয়েছে।

খাবার: স্ত্রী ও পুরুষ মশার মধ্যে খাদ্য গ্রহণের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে। স্ত্রী মশা রক্ত খেয়ে থাকে, যা তাদের ডিম উৎপাদনে সাহায্য করে। অপরদিকে, পুরুষ মশা মূলত ফুলের নেকটর এবং অন্যান্য শর্করা উৎস খেয়ে থাকে। এই খাদ্য পার্থক্য তাদের প্রজনন এবং জীবনচক্রকে প্রভাবিত করে। 

আকার: স্ত্রী ও পুরুষ মশার মধ্যে প্রধান পার্থক্য হল তাদের আকার। সাধারণত স্ত্রী মশা পুরুষদের তুলনায় বড় এবং স্থূল হয়। স্ত্রী মশার দেহে ডিম রাখার জন্য বেশি পুষ্টির প্রয়োজন হয়, তাই তারা বেশি খাদ্য সংগ্রহ করে। স্ত্রী মশার দেহে কিছু প্রকারের বৈশিষ্ট্য থাকে যা রক্ত পানের সময় সুবিধাজনক করে তোলে। পুরুষ মশার শরীর তুলনামূলক ছোট হয়ে থাকে। 

জীবনকাল: স্ত্রী মশা এবং পুরুষ মশার জীবনকাল ভিন্ন। স্ত্রী মশার জীবনকাল পুরুষের তুলনায় দীর্ঘ হয়। সাধারণত স্ত্রী মশার জীবনকাল ২ সপ্তাহ থেকে ১ মাস পর্যন্ত হতে পারে, যেখানে পুরুষ মশার জীবনকাল ৪-৬ দিনের বেশি হয় না।  

একটি স্ত্রী মশা সাধারণত ১০০ থেকে ৩০০টি ডিম পাড়তে পারে, এবং এই ডিমগুলো মাটি বা পানিতে জমে থাকে। একটি স্বাস্থ্যের অধিকারী স্ত্রী মশা যখন সঠিক পরিবেশে থাকে, তখন সে অধিক সংখ্যক ডিম পাড়ার সম্ভাবনা থাকে। এর মানে হল যে, যদি আমরা মশার প্রজননের স্থানগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারি, তবে মশার উপদ্রব ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। জীবদ্দশায় একটি স্ত্রী মশা ১০০০-৩০০০ ডিম দিয়ে থাকে।  

মশার উপদ্রব বাড়লে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক সমস্যা সৃষ্টি করে। ডেঙ্গুর মতো রোগগুলোর কারণে অনেকের জীবন হুমকির মুখে পড়ে। মশার আক্রমণের কারণে অস্বস্তি, বিরক্তি এবং ঘুমের ব্যাঘাতও ঘটে।

স্বাস্থ্য সমস্যা: মশার উপদ্রব বাড়লে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। মশার মাধ্যমে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া, চিকুনগুনিয়া ও জাপানি এনসেফালাইটিসের মতো গুরুতর রোগ ছড়াতে পারে। এসব রোগের ফলে জ্বর, মাথাব্যথা, শরীরের যন্ত্রণা, এবং কিছু ক্ষেত্রে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়া, মশার কামড়ের কারণে অ্যালার্জি ও চর্মরোগের সমস্যাও হতে পারে। বিশেষ করে, শিশুরা ও বয়স্করা এ ধরনের রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। তাই, মশার প্রজনন স্থান দূর করা, পরিষ্কার পরিবেশ বজায় রাখা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা জরুরি। মশার মাধ্যমে ছড়ানো বিভিন্ন রোগের কারণে রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়, যা সমাজের জন্য একটি বড় বিপর্যয়।

অর্থনৈতিক ক্ষতি: মশার উপদ্রব বাড়লে অর্থনৈতিক ক্ষতি বিভিন্নভাবে হয়। মশাবাহিত রোগ যেমন ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া ও জিকা ভাইরাসের কারণে স্বাস্থ্যখাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়। রোগী বৃদ্ধি পেলে চিকিৎসা ব্যয়, হাসপাতালের ভর্তির সংখ্যা এবং কর্মক্ষেত্র থেকে অনুপস্থিতির হার বাড়ে, যা সামগ্রিক উৎপাদনশীলতাকে হ্রাস করে। এছাড়াও, মশার কারণে কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদন কমে যেতে পারে, কারণ তারা ফসলের ওপর আক্রমণ চালাতে পারে। এর ফলে কৃষকদের আয়ের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিকল্পনার বাস্তবায়নও বাধাগ্রস্ত হয়, ফলে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা দুর্বল হয়।

মনস্তাত্ত্বিক চাপ: মশার উপদ্রব বাড়লে মানসিক স্বাস্থ্যে ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে। মশার কামড়ের কারণে অস্বস্তি, অনিদ্রা ও মানসিক চাপ বাড়ে। যখন মানুষ মশার জন্য উদ্বিগ্ন থাকে, তখন তার কার্যক্ষমতা কমে যায় এবং কাজের প্রতি মনোযোগ হারায়। এছাড়া, মশার মাধ্যমে রোগের সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে, যা আরও উদ্বেগ সৃষ্টি করে। এসব কারণে মানুষের জীবনযাত্রা বিঘ্নিত হয় এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যগত সমস্যা সৃষ্টি করে। 

মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কিছু কার্যকর উপায় রয়েছে। নিচে উল্লেখিত উপায়গুলো অনুসরণ করলে আপনি এবং আপনার পরিবার মশার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে পারেন:

মশার উপদ্রব থেকে বাঁচার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো জল জমা থেকে বিরত থাকা। বাড়ির আশপাশে যেকোনো ধরনের জল জমে থাকলে তা মশার প্রজননের জন্য আদর্শ পরিবেশ সৃষ্টি করে। তাই, ফুলের টবে, ছাদে বা কোনো পাত্রে জমে থাকা জল নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। বৃষ্টির পর জল জমতে দিলে তা দ্রুত পরিষ্কার করতে হবে। এছাড়া, যেসব জায়গায় পানি জমে থাকে, সেগুলোতে সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।

 মশার উপদ্রব থেকে বাঁচার একটি কার্যকর উপায় হল মশারি ব্যবহার করা। রাতে ঘুমানোর সময় মশারি টানিয়ে নিন, এটি আপনাকে মশার কামড় থেকে রক্ষা করবে। মশারির টানা বা সঠিকভাবে লাগানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেন কোনো ফাঁক না থাকে। এটি নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর উপায় হিসেবে পরিচিত। মশারির মাধ্যমে আপনি নিদ্রা লাভের পাশাপাশি বিভিন্ন মশাবাহিত রোগ থেকেও দূরে থাকতে পারবেন।

মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে মশা তাড়ানোর স্প্রে বা লোশন ব্যবহার করা অত্যন্ত কার্যকরী। বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মশা তাড়ানোর স্প্রে ও লোশন পাওয়া যায়, যা শরীরের ত্বকে লাগানোর মাধ্যমে মশা দূরে রাখতে সাহায্য করে। ব্যবহার করার আগে লোশন বা স্প্রে ভালোভাবে মিশ্রিত করতে হবে এবং শরীরের উন্মুক্ত অংশে লাগাতে হবে। এটি মশার কামড় থেকে রক্ষা করে, বিশেষ করে রাতে ঘুমানোর সময়। মশার উপদ্রব থেকে মুক্ত থাকতে নিয়মিত এই উপায়গুলো ব্যবহার করুন। 

বাড়ির বাইরে এবং আশেপাশের পরিবেশ পরিষ্কার রাখুন। আবর্জনা, লতাপাতা ও অন্যান্য পদার্থ পরিষ্কার করুন। বাড়ির পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখলে মশার উপদ্রব অনেকটাই কমে যায়। প্রথমে বাড়ির আশেপাশে জমা পানির উৎসগুলো অপসারণ করুন, যেমন পাত্রে বা বালতিতে পানি না জমতে দিন, ডাবের খোলস ও কোন পাত্রে যেন পানি না জমে থাকে সে ব্যাপেরে লক্ষ রাখুন।  

মশা থেকে বাঁচতে ফুল ও গাছের যত্ন নেওয়া অপরিহার্য। গাছের পাতায় জমে থাকা জল পরিষ্কার করুন, কারণ মশার প্রজননের জন্য এটি আদর্শ স্থান। গাছের চারপাশে মশার তাড়ানোর জন্য ন্যাচারাল উপাদান ব্যবহার করুন, যেমন তুলসি ও পুদিনা। নিয়মিত গাছের পরিচর্যা করলে মশার প্রাদুর্ভাব কমে যায়। এছাড়া, ফুল ও গাছের সুগন্ধও পরিবেশকে সুন্দর করে তোলে এবং মশা তাড়াতে সহায়তা করে।

মশার উপদ্রব কমাতে পাখিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, যেমন পিপঁজর এবং কল্যাণী, মশা ও অন্যান্য কীটপতঙ্গ শিকার করে। এদের খাদ্য তালিকায় মশা থাকায়, পাখিদের আবাসস্থল সংরক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরি। প্রাকৃতিক শিকারীদের মাধ্যমে মশার সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। এজন্য আমাদের উচিত বাগান এবং পার্কে পাখিদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা, যাতে তারা মশার উপদ্রব কমাতে সহায়তা করতে পারে।

মশা কর্পূরের গন্ধ একেবারেই সহ্য করতে পারে না। আপনি যে কোন ফার্মেসিতে গিয়ে কর্পূরের ট্যাবলেট কিনে নিতে পারেন। একটি ৫০ গ্রামের কর্পূরের ট্যাবলেট একটি ছোট বাটিতে রেখে বাটিটি পানি দিয়ে পূর্ণ করুন। এরপর এটি ঘরের কোণে রেখে দিন। তাৎক্ষণিকভাবেই মশা গায়েব হয়ে যাবে। দুই দিন পর পানি পরিবর্তন করে নিন। আগের পানিটুকু ফেলে দিবেন না। এই পানি ঘর মোছার কাজে ব্যবহার করলে ঘরে পিঁপড়ের যন্ত্রণা থেকেও মুক্তি পাবেন।

মশার কয়েল ও ধূপ: ঘরের কোণায় মশার কয়েল বা ধূপ জ্বালান। এটি মশা তাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। 

লেবু ও লবঙ্গ: একটি লেবুকে কেটে সেটার ভেতরে লবঙ্গ গুঁজে রাখুন। এটি মশার  বিরোধী গন্ধ তৈরি করে যা মশাকে কাছে আসতে দেয় না।   

পুদিনা পাতা: ঘরের কোণায় কোণায় পুদিনা পাতার রস ছিটিয়ে দিলে মশার উপদ্রব থেকে বাঁচা যায়।  

মশার ব্যাট: ইলেকট্রনিক মশার ব্যাট ব্যবহার করে মশা মারা যায়।

তুলসী গাছ: ঘরের ভিতরে বা বাইরে তুলসী গাছ লাগানো। তুলসীর গন্ধ মশার সহ্য করতে পারে না।

মশার উপদ্রব প্রতিরোধে কিছু সতর্কতা মেনে চলা প্রয়োজন:

নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা: ডেঙ্গু বা অন্যান্য রোগের উপসর্গ দেখা দিলে তাত্ক্ষণিক চিকিৎসা নিন।

বাড়ির চারপাশে নিয়মিত পরীক্ষা: বাড়ির আশেপাশে নিয়মিত পরীক্ষা করে দেখুন কোনো স্থানে জল জমে আছে কি না।

অবৈধ নির্মাণ ও জমে থাকা পানি অপসারণ: অবৈধ নির্মাণ কাজ বন্ধ করুন এবং জমে থাকা পানি অপসারণের জন্য ব্যবস্থা নিন।  

মশার উপদ্রব থেকে বাঁচার উপায় জানা এবং সেগুলো অনুসরণ করা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত সচেতনতা ও পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে আমরা মশার উপদ্রব প্রতিরোধ করতে পারি এবং স্বাস্থ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারি। মনে রাখবেন, প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য আমাদের সুরক্ষার জন্য অপরিহার্য, তাই সেগুলোকে সম্মান করা এবং রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। মশার উপদ্রব থেকে মুক্ত থাকতে হলে আমাদের সচেতন থাকতে হবে এবং সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে। আশা করি, এই ব্লগ পোস্টটি আপনাকে মশার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করবে।

dr. shahidul islam
Dr. S.M Shahidul Islam

Dr. S.M Shahidul Islam is highly reputed for pain management treatment in Bangladesh. His treatment is very effective for excessive pain, anxiety, depression, insomnia, PLID, back pain, frozen shoulder, knee pain, arthritis, migraine, and many more. Citizens from several countries, India, Saudi Arabia, Turkey, Qatar, and the United Arab Emirates, have come to Bangladesh to take his treatment. Currently, he is one of the best pain and paralysis doctor in Bangladesh.

Leave a Reply

Receive the latest news

Subscribe To My Weekly Newsletter

Get notified about new articles