কান ব্যথার কারণ, লক্ষণ এবং চিকিৎসা

কান ব্যথার চিকিৎসা, কারণ ও লক্ষণ | Dr S. M. Shahidul Islam

কান ব্যাথা (Earache) যা ওটালজিয়া নামেও পরিচিত । মানুষের জিবনে খুবই পরিচিত একটি সমস্যা এই কানে ব্যাথা। ছোট বড় যেকোনো বয়সে এই ব্যাথা হয়ে থাকে । এ ব্যাথার ফলে অনেক সময় মানুষ বধির হয়ে যায় । কানে ব্যাথাকে স্বাভাবিক পর্যায়ে অনেকে হালকা ভাবে নেয় এবং সঠিক কারণ না জেনে ঘরোয়া চিকিৎসা করে, যার ফলে কানে নানা রকম জটিলতা দেখা যায়। তাই কান ব্যথার চিকিৎসা, কারণ ও লক্ষণ সম্পর্কে আমাদের সকলেরই সঠিক তথ্য জানা খুবই জরুরী।

কানের ব্যথা কি?

কানের ব্যথা (Earache) বলতে, কানের মধ্যে অস্বস্তি থেকে শুরু করে শ্রবণশক্তি পুরোপুরি হারানোর মতো যে কোনও রকমের উপসর্গকে কানের রোগ বা কান ব্যথা বলে। কান তিনটি অংশে বিভক্ত – বাহিঃকর্ণ, মধ্যকর্ণ এবং অন্তঃকর্ণ এবং এই অংশগুলির প্রধান কাজ হলো শোনা এবং শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখা। কিছু সাধারণ কানের রোগ হলো কানে প্রদাহ, কানে ভোঁ ভোঁ শব্দ, কানে খোল/ময়লা জমা হওয়া বা কান বন্ধ, মেনিয়ার্স ডিজিজ, কানে ছত্রাক সংক্রমণ।

শিশুদের কানে ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা। ছোট বাচ্চাদের এটি বেশি হতে দেখা যায়। খুব কম বাচ্চাই আছে যাদের জীবনে এ অভিজ্ঞতা হয় না। কানের এ ইনফেকশন থেকে সাধারণত কান পাকা রোগের সৃষ্টি হয়। ছোটদের কানের ইনফেকশনের ঠিকমতো ও পর্যাপ্ত চিকিৎসা না হলে অথবা ঘনঘন ইনফেকশন (Ear Infection) হতে থাকলে এ সময় কানের পর্দা ফেটে যেতে পারে।

আকুপাংচার চিকিৎসার মাধ্যমে কানে ব্যাথা থেকে সমাধান পাওয়ার গল্প জানুন রোগীর নিজের মুখে

বাংলাদেশের অন্যতম পেইন ও প্যারালাইসিস বিশেষজ্ঞ ডাক্তার (Pain And Paralysis Doctor) ডা. এস. এম. শহিদুল ইসলাম ঔষধ বিহীন ব্যথার চিকিৎসা প্রদান করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। তিনি বিভিন্ন রকম ব্যথা যেমন কোমর ব্যথা, বাত ব্যথা, ঘাড় ব্যথা, কান ব্যথার চিকিৎসা সহ আরও অন্যান্য রোগের চিকিৎসা প্রদান করে থাকেন। তিনি আকুপাংচার পদ্ধতিতে সকল চিকিৎসা প্রদান করে থাকেন।

কানের ব্যথার প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গ

রোগী ভেদে কানে ব্যাথার লক্ষণ ভিন্ন হয়ে থাকে। সাধারণত কানে ব্যাথা ধীরে ধীরে শুরু হলেও পরবর্তীতে তা বিকাশ হতে থাকে। অনেক সময় এ ব্যাথা ব্যাপক যন্ত্রণায় রুপ নিয়ে থাকে। কান ব্যাথা সাধারণত কানের ভেতর থেকে শুরু হয়ে থাকে, আবার কিছু ক্ষেত্রে কানের বাহিরের অংশ থেকেও সৃষ্টি হতে পারে। ওটালজিয়া অর্থাৎ কানের ভেতর থেকে যেই ব্যাথা সৃষ্টি হয় এই ব্যাথাটি ধীরে ধীরে ভয়াবহ রুপ নিতে পারে অনেকের ক্ষেত্রে, যা কিনা সেকেন্ডারি ওটালজিয়া অর্থাৎ কানের বাহিরে থেকে যেই ব্যাথা সৃষ্টি হয় তার ক্ষেত্রেও হয়ে থাকে।

কানের ব্যাথা একটি অতিব যন্ত্রণাদায়ক ব্যাথা । এটি অনেকের ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী হয়ে থাকে । বিশেষ করে শিশুদের জন্য বেশি কষ্টদায়ক হয়ে থাকে এই কানে ব্যাথা । কানে ব্যাথার অনেক লক্ষণ রয়েছে যার মধ্যে থেকে প্রধান কিছু লক্ষণ নিম্নে দেওয়া হল:

  • লালচেভাব এবং ফোলা : অনেক সময় কানে ব্যথার পাশাপাশি কান ফুলে যায় আবার কান লাল হয়ে যায় ।
  • কান থেকে পুঁজ পড়া : বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কান পেকে যায় বা কান থেকে পুঁজ পড়তে থাকে। এক্ষেত্রে ব্যাথার মাত্রা খুবই তীক্ষ্ণ হয়ে থাকে ।
  • মাথা ঘোরা এবং ভারসাম্য হারানো: অতিরিক্ত কান ব্যাথার কারনে মাথা ঘোরা বা ভারসাম্য হারানোর মতো পরিস্থিতির শিকার হয় অনেকেই ।
  • কানের মধ্যে ঝিঁ ঝিঁ বা ভোঁ ভোঁ শব্দ হওয়া: কানে ব্যাথার রোগীদের একটি বিশেষ লক্ষণ হলো কানের মধ্যে ঝিঁ ঝিঁ বা ভোঁ ভোঁ শব্দ হওয়া ।
  • হঠাৎ তীব্র কানে ব্যাথা বা জ্বালা: অনেকের ক্ষেত্রে ঠিক সবসময় নয়, হঠাৎ হঠাৎ তীব্র কানে ব্যাথা শুরু হয়ে থাকে ।
  • কান ভার বা বন্ধ লাগা ভাব: অনেকের ক্ষেত্রে কান ভার হয়ে থাকে আবার কান বন্ধ লেগে থাকে । কানে ব্যাথার অন্যতম একটি লক্ষণ এটি ।
  • কান থেকে পানি বের হওয়া: কানে ব্যাথার কারনে কান থেকে পানি জাতীয় তরল বের হয়ে থাকে।
Pain And Paralysis
pain doctor
shahidul islam
acupuncture doctor
Dr. Shahidul Islam

ডা. শহিদুল ইসলাম এর তত্বাবধানে কোন প্রকার ঔষধ ছাড়া পেইন ও প্যারালাইসিস (Pain And Paralysis Treatment) সহ বিভিন্ন ধরনের ব্যথার চিকিৎসা করা হয়। Dr. Shahidul Islam বাংলাদেশের একজন সুনামধন্য আকুপাংচার ডাক্তার।

কানে ব্যাথা কেন হয়? প্রধান কারণগুলি নিম্নরূপ

কানে ব্যাথা কেন হয়? – বিভিন্ন কারনে কানে ব্যাথা হয়ে থাকে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সংক্রমণের কারণে কানে ব্যাথা হয়ে থাকে। ডাক্তারদের মতে ইউস্টাচিয়ান টিউবে পানি বা তরল জমা হওয়ার কারনে হতে পারে অর্থাৎ দীর্ঘ ইউস্টচিয়ান টিউব দীর্ঘ সময় যদি অবরুদ্ধ থাকে তাহলে সেখানে তরল বা পানি জমা হতে পারে যার ফলে কানের সংক্রমণ হতে পারে। এ ধরনের সংক্রমণ শিশুদের মধ্যে বেশি হয়ে থাকে। এ ছাড়াও আরও বিভিন্ন কারণে কান ব্যাথা হয়ে থাকে, যা নিম্নরুপ।

  • ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক বা ভাইরাস ঘটিত সংক্রমণ: কানের ভেতরে কোন প্রকার ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক বা ভাইরাস থাকলে সেখান থেকে কানে ইনফেকশন হতে পারে।
  • হঠাৎ বায়ু এবং জলের চাপের পরিবর্তনের কারণে কানে আঘাত: হঠাৎ কানে জোরে বাতাস বা পানি ঢুকলে কানের ভেতরে আঘাত হানে, যার ফলে কানে ব্যাথা সৃষ্টি হতে পারে।
  • কানের ভিতরে ক্যালসিয়াম ক্রিস্টালের নড়াচড়ার ফলে শরীরের ভারসাম্য হারানো:  কানের ভেতরে ক্যালসিয়াম ক্রিস্টালের নড়াচড়া হওয়ার কারনে কানে ব্যাথার সৃষ্টি হতে পারে।
  • একনাগাড়ে জোরালো শব্দের কারণে শ্রবণ শক্তি হারানো: একটানা কোন জোরালো শব্দ কানে গেলে কানের পর্দা ফেটে যেতে পারে, অন্যথায় কানে ব্যাথার সৃষ্টি হতে পারে।
  • বয়স বা ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধির কারণে কানের পর্দা দুর্বল হয়ে যাওয়া: অনেক সময় বয়স বৃদ্ধির কারনে অনেকের কানের ব্যাথা হয় আবার শরীরে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধির কারণে কানের পর্দা দুর্বল হয়।
  • কিছু ওষুধের কারণে কানের মধ্যে ঝিঁ ঝিঁ শব্দ হওয়া: বিভিন্ন ঔষধ সেবনের কারনে কানে ব্যাথার সৃষ্টি হয়ে থাকে
  • দাঁত সংক্রমণ: অনেক সময় দাতে ইনফেকশনের কারণেও কানে ব্যাথা হয়ে থাকে।
  • গলায় ইনফেকশন: অনেক সময় গলায় ইনফেকশন হলে কানের ব্যাথা হ্যে থাকে।
  • টেম্পোরোম্যান্ডিবুলার জয়েন্ট সিন্ড্রোম: এটি কানে ব্যাথা হওয়ার অন্যতম একটি কারণ।
  • চোয়াল ব্যাথা: কানের নিচের দিকে অর্থাৎ চোয়াল্র ব্যাথার কারনে কানে ব্যাথা হয়ে থাকে।
  • দুর্ঘটনা জনিত কানে খোঁচা: কানের ভেতরে কোন কারনে খোচা লেগে আঘাত পেলে কানে ক্যাথার সৃষ্টি হয়ে থাকে।
কান ব্যথার চিকিৎসা

কানে ব্যাথার জটিলতা

কানে ব্যাথা খুবই যন্ত্রণাদায়ক একটি ব্যাথা। ছোট বড় সকলের ক্ষেত্রেই এ ব্যাথা খুবই খারাপ রুপ ধারণ করতে পারে। কানে ব্যাথার কারনে নানা রকম জটিলতা দেখা দিতে পারে। দীর্ঘদিন কানে ব্যাথা থাকলে বা কানে কোন প্রকার ইনফেকশন থাকলে সেখান থেকে বড় ধরনের অনেক রোগের সৃষ্টি হতে পারে অনেক সময় রোগী বধীর হয়ে যেতে পারে। অনেকে ঘরোয়া ভাবে কানে ব্যাথার চিকিৎসা করে থাকেন, কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ঘরোয়া চিকিৎসায় কানের ব্যাথা ভালো হয় না। তবে আকুপাংচার চিকিৎসার মাধ্যমে কোন ঔষধ ছাড়া কানে ব্যাথার চিকিৎসা করা যায়।

কান ব্যথার প্রতিকারে আকুপাংচারের ভূমিকাঃ

আকুপাংচার হল একটি ঐতিহ্যবাহী চীনা ওষুধের অনুশীলন যা বিভিন্ন শারীর বৃত্তীয় এবং থেরাপিউটিক প্রভাবকে উদ্দীপিত করার জন্য শরীরের নির্দিষ্ট পয়েন্ট গুলিতে পাতলা সূঁচ ঢোকানো সাথে জড়িত। কানের ব্যথা প্রতিকারের জন্য আকুপাংচার একটি পরিপূরক বা বিকল্প চিকিৎসা হিসাবে প্রমাণিত। আকুপাংচার চিকিৎসা কানের ব্যথা নিরাময়ের জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা হতে পারে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আকুপাংচার খুবই জনপ্রিয় একটি চিকিৎসা পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে কোন প্রকার ঔষধ ছাড়া কানে ব্যাথার চিকিৎসা করা যায়।

বর্তমান বাংলাদেশের সবথেকে বড় ও সেরা আকুপাংচার হাসপিটাল, শশী হাসপাতালে দেশসেরা আকুপাংচার বিশেষজ্ঞ ডা. এস. এম. শহীদুল ইসলাম যিনি দীর্ঘদিন ধরে ঔষধ ছাড়া ব্যথার চিকিৎসা (Pain treatment without medicine in Bangladesh) প্রদান করে আসছেন দেশজুড়ে। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও আকুপাংচার চিকিৎসার ব্যবহার এবং চাহিদা বেড়ে চলছে।

কান ব্যথাচিকিৎসায় কীভাবে আকুপাংচার কাজ করে?

আকুপাংচার স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে এবং ব্যথার সংকেত নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, এটি নির্দিষ্ট নিউরোপ্যাথিক মুখের ব্যথার অবস্থার জন্য সম্ভাব্য কার্যকর করে তোলে। প্রভাবিত এলাকায় রক্ত প্রবাহকে উদ্দীপিত করে, আকুপাংচার টিস্যু নিরাময়ে এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। কানের ব্যথার অন্তর্নিহিত কারণ বুঝতে একজন যোগ্য এবং লাইসেন্সপ্রাপ্ত আকুপাংচার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অপরিহার্য। আকুপাংচার কানের ব্যথায় আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য একটি সম্ভাব্য ও ওষুধ বিহীন একটি বিকল্প চিকিৎসা।

পরিশেষে

কানে ব্যাথা বিভিন্ন কারনে মানুষের হয়ে ত্থাকে । কিছু ক্ষেত্রে এর মাত্রা অধিক আবার কিছু ক্ষেত্রে এর মাত্রা কম । কানে ব্যাথা হওয়ার নির্দিষ্ট কোন কারণ নেই। বিভিন্ন বয়সে এই সমস্যা হতে পারে। তবে বাচ্চা শিশুদের ক্ষেত্রে কান ব্যাথা বেশি কষ্টকর। কান ব্যাথা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার পর বোঝা গিয়েছে যে, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। তাই এই সমস্যা দেখা দিলে অতি দ্রুত একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। অন্যথায় সমস্যাটি বড় রুপ ধারণ করতে পারে। কানের ব্যথা সিন্ড্রোমের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরণের ব্যথার ওষুধ রয়েছে যা সাময়িকভাবে ব্যথা কমাতে নেওয়া যেতে পারে। কানে ব্যথার চিকিৎসার জন্য নতুন পদ্ধতি আকুপাংচার। আকুপাংচার, কানের ব্যথা রোগ সম্পূর্ণরূপে নিরাময়ে সাহায্য করে। ডাক্তাররা দেখেছেন যে আকুপাংচার কানের ব্যথা চিকিৎসায় খুব সহায়ক হতে পারে।

বাংলাদেশের বহুল পরিচিত দেশসেরা পেইন ও প্যারালাইসিস ডাক্তার এবং আকুপাংচার বিশেষজ্ঞ, Dr. Shahidul Islam ঢাকায় অবস্থিত শশী আকুপাংচার হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সাথে কোন প্রকার ঔষধ ছাড়া (Non medicine treatment in Bangladesh) বিভিন্ন রকম ব্যথা যেমন কোমর ব্যথা, বাত ব্যথা, ঘাড় ব্যথা, কান ব্যথার চিকিৎসা সহ আরও অন্যান্য রোগের চিকিৎসা প্রদান করে আসছেন।

See More…

কান, কোমর ও পিঠ ব্যথা সমস্যা থেকে মুক্তি পেলেন আকুপাংচার চিকিৎসার মাধ্যমে

বধিরতার (Deafness) কারণ এবং বধির চিকিৎসায় আকুপাংচার

Leave a Reply

Receive the latest news

Subscribe To My Weekly Newsletter

Get notified about new articles