মুখ বেঁকে যাওয়া ও মাংসপেশী শক্ত হওয়া (Facial spasm) কারণ, লক্ষণ এবং আকুপাংচার চিকিৎসা

মুখ বেঁকে যাওয়া ও মাংসপেশী শক্ত হওয়া কারণ, লক্ষণ এবং আকুপাংচার চিকিৎসা | Bell’s Palsy

মুখ বেঁকে যাওয়া বা বেলস পালসি কি? (Bell’s Palsy)

মনে করুন কোনো একদিন হঠাৎ করেই খেয়াল করলেন মুখটা যেন একদিকে একটু বেঁকে গেছে। সুস্থ স্বাভাবিক শরীরে, যেখানে এখনও অব্ধি এই ধরণের কোনো সমস্যাই কখনও দেখা দেয়নি, অথচ হঠাৎই  মনে হচ্ছে যেন খাবার এমনকি পানি ও গিলতে গিয়ে মুখের একদিকে আটকে আছে বা চিবোতে কষ্ট হচ্ছে। কোনো ক্ষেত্রে এমনও হয়  যে একদিকের চোখের পাতা বন্ধ হচ্ছে না সহজে। নাহ্, গুরুতর কিছু হয়নি, এটি একটি স্নায়বিক  সমস্যা, যার নাম বেলস পালসি। আমাদের সপ্তম ক্রেনিয়াল নার্ভ (7th cranial nerve) বা ফেসিয়াল নার্ভে (facial nerve) সমস্যার কারণে এই জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে। কোনো কারণে ব্যথা যন্ত্রণা হলে স্নায়ুটি ফুলে যায় ও চাপ লেগে মুখমণ্ডলের পেশি, জিভের স্বাদ বা চোখের পাতা নড়াচড়ায় সমস্যা দেখা দেয়।

আকুপাংচার চিকিৎসা নিয়ে বেলস পালসি থেকে সুস্থ্য রোগী

মুখ বেঁকে যাওয়া ও মাংসপেশী শক্ত হওয়া এমন একটি অবস্থা যা মুখের পেশীতে অস্থায়ী দুর্বলতা বা পক্ষাঘাত সৃষ্টি করে ও মাংসপেশী শক্ত হয়ে যায়। এটি তখন ঘটতে পারে যখন মুখের পেশীগুলি নিয়ন্ত্রণ করে (সপ্তম ক্রেনিয়াল স্নায়ু বা ফেসিয়াল নার্ভ) এমন স্নায়ু ফুলে যায়, চাপে পড়ে যায়, ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা আঘাত প্রাপ্ত হয়। এটি সাধারণত একদিকে আক্রান্ত করে, তবে অতি নগন্য সংখ্যক হলেও মুখের উভয় দিকও আক্রান্ত হতে পারে।

এর ফলে মুখের অনাক্রান্ত পাশ কুঁচকে যায় বা শক্ত হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্থ দিকে মুখ বাকা করতে বা চোখ বন্ধ করতে সমস্যা হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, এ সমস্যা অস্থায়ী এবং লক্ষণগুলি সাধারণত কয়েক সপ্তাহ পরে চলে যায়। ১৮২৯ সালে স্কটল্যান্ডের একজন সার্জন স্যার চার্লস বেল সর্ব প্রথম এই রোগ সম্পর্কে বর্ণনা দেন। তাঁর প্রতি শ্রোদ্ধা রেখে, এ রোগের নাম দেওয়া হয় Bell’s Palsy। 

বেলস পালসি কেন হয়?

যদিও মুখ বেঁকে যাওয়া ও মাংসপেশী শক্ত হওয়া যে কোনও বয়সে হতে পারে, তবে এ রোগ ১৬ থেকে ৬০ বছর বয়সীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। প্রতি ৬০ জন মানুষের মধ্যে ১ জনের এ রোগ দেখা দিতে পারে। এ রোগের সঠিক কারণ অজানা, তবে অনেক চিকিৎসক ও গবেষক বিশ্বাস করেন, এটি সম্ভবত ভাইরাস সংক্রমণের ফলেই হয়ে থাকে।

ঠান্ডা জনিত কারণে কিংবা কানের সংক্রমণ বা চোখের সংক্রমণ হওয়ার এক থেকে দুই সপ্তাহ পরে বেলস পালসির লক্ষণগুলি দেখা দিতে পারে। এগুলি সাধারণত হঠাৎ করে উপস্থিত হয় এবং সকালে ঘুম থেকে ওঠার সময় বা খেতে বা পান করার চেষ্টা করার সময় সেগুলি যে কেউ লক্ষ্য করতে পারেন।

আকুপাংচার চিকিৎসার মাধ্যমে বেলস পালসি রোগ ভালো হয়। আকুপাংচার একটি ঔষধ বিহীন চিকিৎসা পদ্ধতি। এই মাধ্যমে কোন প্রকার ঔষধের ব্যবহার করা হয় না। বাংলাদেশের সুনামধন্য আকুপাংচার বিশেষজ্ঞ ডা. এস. এম. শহীদুল ইসলাম এর চিকিৎসায় অসংখ্য বেলস পালসি রোগী সম্পূর্ণ ভাবে সুস্থ্য হয়েছেন। বাংলাদেশের ঢাকায় অবস্থিত শশী হাসপাতালে বেলস পালসি রোগের চিকিৎসা (Bell’s palsy treatment in Dhaka, Bangladesh) করা হয়।

মুখ বেঁকে যাওয়া বা বেলস পালসি রোগের লক্ষণ

  • মুখের মাংসপেশি সামান্য ঝুলে যাওয়া।
  •  খাওয়া দাওয়া করতে সমস্যা।
  • মুখের ভাব প্রকাশে অক্ষমতা, যেমন হাসি বা ভ্রূকুচি।
  • মুখের দুর্বলতা,মুখের অনাক্রান্ত দিকে পেশী সংকুচিত হয়ে যাওয়া বা বাঁকা হয়ে যাওয়া।
  • শুকনো চোখ এবং মুখ ও জড়িত দিকে চোখ জ্বালা।
  • চোখ বন্ধ করতে না পারা।
  • মাথাব্যথা ও শব্দ সংবেদনশীলতা

এসব লক্ষণ অন্যান্য গুরুতর রোগের ক্ষেত্রেও হতে পারে, যেমন স্ট্রোক ও মস্তিষ্কের টিউমার। তাই এই লক্ষণগুলি কারো দেখা দিলে, শুধু বেলস পালসি মনে না করে, সাথে সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন

মুখ বেঁকে যাওয়া বা বেলস পালসি রোগের চিকিৎসায় আকুপাংচারের ভূমিকা

মুখ বেঁকে যাওয়া বা বেলস পালসি (Bell’s palsy) হওয়া রোগ কমানোর বিভিন্ন উপায় আছে। যেমন ওষুধ সেবন, তবে এমন বিভিন্ন কৌশলও রয়েছে যা উপশম করতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে চিকিৎসা ছাড়াই এই লক্ষণগুলি উন্নত হয়। তবে মুখের পেশীগুলির স্বাভাবিক শক্তি ফিরে পেতে কয়েক সপ্তাহ বা মাস সময় নিতে পারে। সাধারণত চিকিৎসকেরা এ রোগের দ্রুত উপশমের জন্য কর্টিকোস্টেরয়েড, অ্যান্টিভাইরাল বা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, কিছু ব্যথানাশক ঔষধ ও চোখের ড্রপ  দিয়ে থাকেন।

মুখ বেঁকে যাওয়া বা বেলস পালসি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ফেসিয়াল আকুপাংচার (Facial Acupuncture) একটি অত্যন্ত কার্যকরী চিকিৎসা (Bell’s Palsy treatment by acupuncture) হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। আকুপাংচার হল ফুসফুসের কার্যকারিতা উন্নত করার এবং শরীরকে আরও দক্ষতার সাথে কাজ করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আকুপাংচার শরীরে   উদ্দীপনা তৈরি করতে পারে যা স্বাস্থ্যের উন্নতিতে আবশ্যক। নতুন উদ্দীপনা শরীরের প্রভাবিত এলাকায় গঠনে  সাহায্য করে, এবং এটি শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণভাবে কমে যায়।  আকুপাংচারের কোনো পরিচিত নেতিবাচক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই, যা বিকল্প চিকিৎসা হিসেবে ব্যবহার করার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে।

বাংলাদেশের একমাত্র আকুপাংচার স্পেশালাইজড শশী হাসপাতাল এ বেলস পালসি রোগের চিকিৎসা (Bell’s palsy treatment in Dhaka, Bangladesh) করা হয়ে থাকে। এ পর্যন্ত অসংখ্য রোগী এই চিকিৎসার মাধ্যমে বেলস পালসি থেকে মুক্তি পেয়েছেন। এই হাসপাতালে দক্ষ ও অভিজ্ঞ ডাক্তার ডা. এস. এম. শহীদুল ইসলাম (Best acupuncture doctor in Dhaka, Bangladesh) এর তত্বাবধানে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

See More…

১১ টা আকুপাংচার (Acupuncture) সেশনে কোমর ব্যথা থেকে মুক্তি |

টরেট সিনড্রোম (Tourette Syndrome) এর লক্ষণ এবং আকুপাংচারের ভুমিকা

Leave a Reply

Receive the latest news

Subscribe To My Weekly Newsletter

Get notified about new articles