Sore throat

গলা ব্যথার (Sore Throat) কারণ,উপসর্গ ও চিকিৎসা

গলা ব্যথা কি? (Sore Throat)

গলা ব্যথা যাকে ইংরেজিতে বলা হয় ফ্যারিঞ্জাইটিস (Pharyngitis)। প্রধানত ঠান্ডা ও ফ্লু (ইনফ্লুয়েঞ্জা) এর জীবাণুর সংক্রমণে গলায় এ ধরণের সমস্যা হতে দেখা যায়। অনেক সময় গলা ব্যথার জন্য গলায় শুষ্ক চুলকানি হওয়া সহ ঢোক গিলতে, কিংবা খাবার গিলতেও সমস্যা হয়ে থাকে।

আকুপাংচার চিকিৎসার মাধ্যমে গলা ব্যাথা সম্পূর্ণ ভাবে নিরাময় করা যায়। আকুপাংচার একটি ঔষধ বিহীন চিকিৎসা। এটি মূলত একটি চীনা চিকিৎসা পদ্ধতি। বাংলাদেশের সেরা আকুপাংচার ডা. এস. এম. শহীদুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে আকুপাংচার চিকিৎসা প্রদান করে আসছেন সুনামের সাথে।

গলা ব্যথার কারণ সমূহ

গলা ব্যথার জন্য অনেকগুলো কারণ দায়ী যার মধ্যে ভাইরাসজনিত অসু্‌স্থ্যতা যেমন ঠান্ডা, ফ্লু , মনোনিউক্লিওসিস (Mononucleosis) অন্যতম। অন্যান্য ভাইরাসজনিত অসু্স্থ্যতা যেমন- হাম, চিকেনপক্স এর সংক্রমনেও গলা ব্যাথা হতে পারে। ব্যাকটেরিয়া জনিত সংক্রমণ  যেমন টনসিলের সমস্যা ও ডিপথেরিয়ার কারণেও গলা ব্যাথা হয়ে থাকে।

এছাড়া অন্যান্য কারনের মধ্যে এলার্জি জনিত সমস্যা,শুষ্ক আবহাওয়া, বিশেষ করে কোন কারণে শীতকালে ঘরের তাপমাত্রা বেশি গরম হয়ে যাওয়া, ধূমপান করা, অধিক মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া, গলার মাংসপেশীতে চাপ লাগা, এইচআইভি’র সংক্রমণ, ও মদপানের কারণে গলায় টিউমার হওয়া ইত্যাদি।

গলা ব্যথার লক্ষণ সমূহ

গলা ব্যথা হলে প্রধানত নিম্নের কতিপয় লক্ষণ ও উপসর্গসমূহ দেখা দেয়। যেমন-

  • গলায় খসখসে ভাব, চুলকানো এমনকি গলা ফুলেও যেতে পারে।
  • শ্বাস নেয়া, ঢোক গিলা কিংবা কথা বলার সময় গলায় ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
  • ঠান্ডার জন্য গলা ব্যথা হলে এর সাথে শরীরে ব্যথা সহ সর্দি, কাশি, হাঁচি ও জ্বর হতে পারে।

গলা ব্যথার বিভিন্ন উপসর্গ

গলা ব্যথা যদি মারাত্মক আকার ধারণ করে তাহলে টনসিল ফুলে যাওয়া সহ নিম্নের উপসর্গগুলো দেখা দিতে পারে। নিম্নের উপসর্গগুলো দেখা দেয়া মাত্রই ডাক্তরের কাছে গিয়ে সুচিকিৎসা নিতে হবে।

  • ঢোক গিলতে বা খাবার খেতে অসুবিধা হওয়া।
  • বার বার গলা ব্যথা হওয়া।
  • বমি হওয়া।
  • শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ফুসকুড়ি দেখা দেওয়া।
  • অতিরিক্ত মাথা ব্যথা করা।
  • গলা ব্যথা মরাত্মক আকার ধারণ করা।
  • গলার টনসিল ফুলে লালচে হয়ে যাওয়া।
  • ৬ মাসের নীচে বয়সী শিশুদের জ্বর ১০১ ফারেনহাইট এবং বড়দের ক্ষেত্রে তা ১০৩ ফারেনহাইট পর্যন্ত হয়ে যাওয়া।
  • অনেক সময় গলায় বা টনসিলে পুঁজও হতে পারে।

কাদের গলায় ব্যথা হওয়ার ঝুঁকি বেশি?

নিম্নোক্ত ব্যাক্তিদের গলায় ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে।

  • শিশু ও কিশোর-কিশোরীরা যারা ধুলা বালির সংস্পর্শে বেশি আসে।
  • যারা ধূমপান কারী ব্যক্তি বা পরোক্ষ ভাবে যারা এর সংস্পর্শে আসে যেমন যারা ধূমপায়ী ব্যক্তির খুব কাছাকাছি থাকে।
  • যাদের ধূলা-বালি থেকে এলার্জির সমস্যা হয়।
  • যারা ঘরে ব্যবহার করা জ্বালানী ও রাসায়নিক বস্তুর সংস্পর্শে আসে।
  • যাদের দীর্ঘ সময় ধরে সাইনাসের সমস্যা রয়েছে।
  • যারা একসাথে গাদাগাদিভাবে থাকে যেমন-শ্রেণীকক্ষ, অফিস ইত্যাদিতে। এখানে একজনের সমস্যা হলে দ্রুত তা অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
  • এছাড়া যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদেরও এই সমস্যা বেশি হয়।

গলা রোগ প্রতিকারে আকুপাংচারের ভূমিকা

আকুপাংচার হল একটি ঐতিহ্যবাহী চীনা ওষুধের অনুশীলন যা বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় এবং থেরাপিউটিক প্রভাবকে উদ্দীপিত করার জন্য শরীরের নির্দিষ্ট পয়েন্টগুলিতে পাতলা সূঁচ ঢোকানো সাথে জড়িত। গলা ব্যথা পরিচালনার জন্য একটি পরিপূরক বা বিকল্প চিকিত্সা হিসাবে প্রমাণিত।

আকুপাংচার মুখের ও গলার সমস্ত ব্যথার অবস্থার জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা হতে পারে। এটি রোগীদের জন্য একটি ব্যাপক ব্যথা ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার অংশ হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে।

গলা ব্যথার চিকিৎসায় কীভাবে আকুপাংচার কিভাবে কাজ করে?

আকুপাংচার শরীরের এন্ডোরফিন এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক ব্যথা উপশমকারী রাসায়নিকের মুক্তিকে উদ্দীপিত করে গলা ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করে। এটি ব্যথা উপলব্ধি কমাতে এবং শরীর শিথিলি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । টেম্পোরোম্যান্ডিবুলার জয়েন্ট ডিসঅর্ডার (TMJ) বা টেনশন-সম্পর্কিত মুখের ব্যথার মতো অবস্থার জন্য, আকুপাংচার মুখের পেশী শিথিল করতে, পেশীর টান এবং অস্বস্তি কমাতে সাহায্য করতে পারে।

এছাড়া আকুপাংচার স্ট্রেস-কমানোর সুবিধার জন্য  বিশেষ পরিচিত। যেহেতু চাপ এবং উদ্বেগ গলা ব্যথার অবস্থাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে, তাই আকুপাংচারের মাধ্যমে স্ট্রেস পরিচালনা করা পরোক্ষভাবে উপসর্গগুলি উপশম করতে সাহায্য করে।

আকুপাংচার স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে এবং ব্যথার সংকেত নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, এটি নির্দিষ্ট নিউরোপ্যাথিক মুখ ও গলা ব্যথার অবস্থার জন্য সম্ভাব্য কার্যকর করে তোলে। প্রভাবিত এলাকায় রক্ত ​​প্রবাহকে উদ্দীপিত করে, আকুপাংচার টিস্যু নিরাময়ে এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।

আপনার গলা ব্যথার অন্তর্নিহিত কারণ বুঝতে একজন যোগ্য এবং লাইসেন্সপ্রাপ্ত আকুপাংচার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অপরিহার্য। আকুপাংচার গলার ব্যথায় আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য একটি সম্ভাব্য ও ওষুধ বিহীন একটি বিকল্প চিকিৎসা।

See More…

মেরুদন্ড ব্যথার (Spine Pain) কারন , প্রতিরোধের উপায় ও আকুপাংচার এর ভূমিকা

কোমর ব্যথা স্থায়ীভাবে দূর করার উপায় | বিনা ঔষধে ব্যথার চিকিৎসা

Leave a Reply

Receive the latest news

Subscribe To My Weekly Newsletter

Get notified about new articles