রেডিকুলার এবং সিউডোরাডিকুলার পেইন সিনড্রোম (Radicular and Pseudoradicular pain syndrome) কি?
রেডিকুলার সিনড্রোম বলতে এটি এক ধরনের রোগ যা একের অধিক স্নায়ুকে প্রভাবিত করে এবং এটি আপনার পিঠ থেকে পায়ের নিতম্ব পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। আর সিউডোরাডিকুলার সিনড্রোম বলতে ক্লিনিকাল অবস্থাকে বোঝায় যা মেরুদন্ডের জয়েন্টগুলির উপর বা নিম্নে ব্যথা ও জ্বালাপোড়ার সমস্যা দেখা দেয়। এটি আসলে মিশ্র সিনড্রোম যা রেডিকুলার এবং সিউডোরাডিকুলার সিনড্রোম বলা যেতে পারে। এই সিনড্রোম গুলো বিভিন্ন রোগের কারণে হতে পারে। যার নির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই।
রেডিকুলার সিনড্রোম এর লক্ষণ:
রেডিকুলার সিনড্রোমের কারণে যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে তার মধ্যে রয়েছে:
- স্নায়ুর চারপাশে ব্যথা
- অসাড়তা
- পেশীর দুর্বলতা
- অবশ ভাব
- মাংস পেশীতে সুঁচের মত খোঁচানো ভাব
- মাংসপেশীতে জ্বালাপোড়া
এবং সিউডোরাডিকুলার সিনড্রোমের লক্ষণ:
- সায়াটিকার মত নিতম্ব এবং পায়ের নিচের দিকে ব্যথা
- ঘাড়, কাঁধ, হাতে ব্যথা বা ঝাঁকুনি হতে পারে
- পেশীর দুর্বলতা
- ফাইব্রোমায়ালজিয়া রোগের মত তীব্র ব্যথা
রেডিকুলার এবং সিউডোরাডিকুলার ব্যথা সিনড্রোম আকুপাংচারের ভূমিকাঃ
আকুপাংচার হল একটি ঐতিহ্যবাহী চীনা ওষুধের অনুশীলন যা শক্তির প্রবাহকে উদ্দীপিত করতে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য ও মঙ্গলকে উন্নীত করার জন্য শরীরের নির্দিষ্ট পয়েন্টগুলিতে পাতলা সূঁচ প্রবেশ করানোর সাথে জড়িত। আকুপাংচার সাধারণত ব্যথা ব্যবস্থাপনা এবং স্ট্রেস রিলিফের সাথে যুক্ত, এটি রেডিকুলার সিনড্রোম সমস্যা সহ বিভিন্ন চিকিৎসা অবস্থার চিকিৎসায়ও ব্যবহৃত হয়েছে।
বিবেচনা করার জন্য কিছু মূল বিষয় রয়েছে:
হোলিস্টিক অ্যাপ্রোচ: আকুপাংচার হল সামগ্রিক স্বাস্থ্যের ধারণার উপর ভিত্তি করে এবং এটি শুধুমাত্র শারীরিক উপসর্গগুলিই নয়, শরীরের শক্তির অন্তর্নিহিত ভারসাম্যহীনতা বা “কিউই”-এর সমাধান করে। কিউই-এর প্রবাহ উন্নত করে এবং শরীরের শক্তির ভারসাম্য বজায় রেখে, আকুপাংচারের লক্ষ্য শরীরের নিজেকে নিরাময় করার ক্ষমতা বাড়ানো।
ব্যথা ব্যবস্থাপনা: আকুপাংচার তার বেদনানাশক বৈশিষ্ট্যের জন্য বহুল পরিচিত। রেডিকুলার সিনড্রোমের সমস্যাগুলির জন্য এটি বিশেষভাবে কার্যকর। সূঁচ সন্নিবেশ এন্ডোরফিন নিঃসরণকে উদ্দীপিত করতে পারে এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
ফোলা এবং প্রদাহ কমানো: আকুপাংচার ফোলাভাব এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এটি রেডিকুলার সিনড্রোমের মতো অবস্থার জন্য বিশেষভাবে উপকারী।
রক্ত সঞ্চালন উন্নত করা: ক্ষতিগ্রস্ত বা ভাঙা হাড় নিরাময়ের জন্য উন্নত রক্ত সঞ্চালন অপরিহার্য। আকুপাংচার ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় রক্ত প্রবাহ বাড়াতে সাহায্য করে, সম্ভাব্য নিরাময় প্রক্রিয়াকে দ্রুততর করে।
এছাড়া জয়েন্টের ব্যাথা প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণে বিকল্প চিকিৎসা ব্যবস্থা হিসাবে আকুপাংচার বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। মানব শরীরের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ইমপালস কে বিভিন্নভাবে অবহিত করার মাধ্যমে আকুপাংচার জয়েন্টের ব্যথা এবং অন্যান্য ব্যথা নিবারণে যথেষ্ট কার্যকর বলে গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। আকুপাংচার এর মাধ্যমে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা অনেকাংশে বৃদ্ধি পায় এবং শরীর অধিক কার্যক্ষম হয়। এছাড়া এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, আকুপাংচার শরীরের বিভিন্ন অংশের মধ্যে এক ধরণের উদ্দীপনা তৈরী করে। যার কারণে ব্যথাযুক্ত স্থান গুলির মধ্যে নতুন করে উদ্দীপনা তৈরী হয় এবং ব্যথা ধীরে ধীরে প্রশমিত হতে থাকে
আকুপাংচারের কোনো পরিচিত নেতিবাচক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই, যা বিকল্প চিকিৎসা হিসেবে ব্যবহার করার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। আকুপাংচার হল একটি চিকিৎসা পদ্ধতি যা শরীরের নির্দিষ্ট অংশকে লক্ষ্য করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
See More…
বার বার প্রসাবে ইনফেকশন (Recurrent Lower Urinary Tract Infection) কি, লক্ষণ ও চিকিৎসা।