মানবদেহে কয়েকটি স্থানে পাথর হয়। যেমন—কিডনি, মূত্রনালি (মূত্র পাথরি), পিত্তথলি , অগ্ন্যাশয়, প্রোস্টেট ইত্যাদি। যে পাথর হয় সে পাথরের প্রধান উপাদান ক্যালসিয়াম কার্বোনেট, অক্সালেট, সাইট্রেট-অক্সালেট, ফসফেট ইত্যাদি। যা শরীরের রক্ত থেকেই আসে। সাধারণত এসব উপাদানের মাত্রা যদি রক্তে বাড়তি থাকে, তবে পাথর তৈরি হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। এ পাথরগুলো কখনো নরম হয়, অনেক সময় সত্যিকারের পাথরের মতো শক্তও হয়ে থাকে। অনেক সময় কাঁটাযুক্ত হয়ে থাকে, যার কারণে ব্যথা ও রক্তক্ষরণ হয়।
আকুপাংচার চিকিৎসার মাধ্যমে মুত্রপাথরি বা মুত্রনালিতে পাথর সংক্রান্ত রোগের চিকিৎসা (Urinary stones treatment in Dhaka, Bangladesh) করা যায়। এই চিকিৎসার মাধ্যমে কোন প্রকার ঔষধ ছাড়া চিকিৎসা প্রদান করা হয়। ডা. এস. এম. শহিদুল ইসলাম একজন সুনামধন্য আকুপাংচার বিশেষজ্ঞ (Acupuncture doctor in Dhaka, Bangladesh), তিনি দীর্ঘদিন থেকে বাংলাদেশে এই ঔষধ বিহীন চিকিৎসা সেবা প্রদান করে যাচ্ছে।
মূত্রনালিতে পাথর হওয়ার কারণ
মুত্রপাথরি বা মুত্রনালিতে পাথর হওয়ার বেশ কিছু কারণ হতে রয়েছে। এটি একটি যন্ত্রণাদায়ক ব্যথা। মুত্রনালিতে পাথর হওয়ার কারণগুলো নিচে দেওয়া হল:
- ইনফেকশনজনিত রোগ
- মূত্রনালি চিকন হয়ে যাওয়া
- পাথর এসে নালিপথ বন্ধ হয়ে যাওয়া
- টিউমার
- পুরুষদের প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড বড় হলেও প্রস্রাবের পথ বন্ধ হতে পারে বা সরু হতে পারে
মূত্রনালিতে পাথর কেন হয়
এখন পর্যন্ত পাথর হওয়ার সব কারণ বের করা যায়নি। তবে নিচের কারণগুলোতে পাথর বেশি হয়
- রক্তে বেশি পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য উপাদানের উপস্থিতি
- থাইরয়েডগ্রন্থির অসুখ। যেমন, হাইপার থাইরয়ডিজম
- বেশি পরিমাণ ক্যালসিয়ামযুক্ত খাদ্য গ্রহণ,
- দুধ ও দুগ্ধজাতীয় খাদ্য, অস্থিমজ্জা, ছোট মাছ, কলিজা, মগজ, শিমের বীজ, বাঁধাকপি, ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট, কামরাঙা ও কিছু মাটির নিচের খাদ্যদ্রব্য বেশি খাওয়া
- মূত্রতন্ত্রে ঘন ঘন ইনফেকশন ও সময়মতো তার চিকিৎসা না করা।
- জিনগত ত্রুটি ও পরিবেশগত কারণ। যেমন, মধ্যপ্রাচ্যের মানুষদের পাথর বেশি হয়।
মূত্রনালিতে পাথর হওয়ার লক্ষণ
মূত্রনালিতে পাথর হলে এটা কোনো লক্ষণ নাও থাকতে পারে। তবে লক্ষণ প্রকাশ পেলে সাধারণত যা থাকে
- যেদিকে পাথর হবে সেদিকের কিডনিতে ব্যথা অনুভব হবে এবং নিচের দিক থেকে প্রস্রাবের নল পর্যন্ত ব্যথা ছড়িয়ে যাবে।
- প্রস্রাবে জ্বালা-যন্ত্রণা করবে।
- বারবার প্রস্রাবের অনুভূতি হবে।
- বমি বা বমি বমি ভাব হবে।
মূত্রনালিতে পাথর প্রতিরোধে আকুপাংচারের ভূমিকা
মূত্রনালিতে পাথর (renal stone) প্রতিরোধের জন্য বিশেষভাবে আকুপাংচার ব্যবহারকে সমর্থন করার জন্য বৈজ্ঞানিক প্রমাণ রয়েছে। আকুপাংচার একটি ঐতিহ্যবাহী চীনা ওষুধের অনুশীলন যা বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে, পিত্তথলি প্রতিরোধে এর ভূমিকা সুপ্রতিষ্ঠিত। বিশ্ব সংস্থা কর্তৃক স্বীকৃত ১০০ এর বেশি রোগের জন্য আকুপাংচার চিকিৎসাকে সুপারিশ করা হয়েছে। সে তালিকার মধ্যে এই রোগটি অন্যতম একটি রোগ।
বিবেচনা করার জন্য কিছু পয়েন্ট
গবেষণাঃ মূত্রনালিতে পাথর প্রতিরোধে আকুপাংচারের কার্যকারিতা নিয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণা রয়েছে। আকুপাংচারের উপর বেশিরভাগ গবেষণায় ব্যথা পরিচালনা, স্ট্রেস কমানো এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরিস্থিতি মোকাবেলায় এর সম্ভাব্য ভূমিকার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা হয়েছে। মূত্রনালিতে পাথর একাধিক কারণের দ্বারা প্রভাবিত হয়, যার মধ্যে রয়েছে খাদ্য, জেনেটিক্স এবং অন্যান্য চিকিৎসা অবস্থা। লাইফস্টাইল পরিবর্তন, যেমন একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য এবং ওজন বজায় রাখা, সাধারণত পিত্তথলি প্রতিরোধের জন্য সুপারিশ করা হয়।
পরিপূরক পদ্ধতিঃ আকুপাংচারকে মূত্রনালিতে পাথর (মূত্র পাথরি) প্রতিরোধের একটি পরিপূরক থেরাপি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এটিকে সুস্থতার জন্য একটি সামগ্রিক পদ্ধতির অংশ হিসেবে দেখা গুরুত্বপূর্ণ। আকুপাংচার স্ট্রেস হ্রাস এবং সামগ্রিক শিথিলকরণে সাহায্য করে। পিত্তথলি প্রতিরোধে এর নির্দিষ্ট প্রভাব সুপ্রতিষ্ঠিত রয়েছে।
আকুপাংচার চিকিৎসাকে একটি পরিপূরক থেরাপি বিবেচনা করছেন সে সম্পর্কে সর্বদা আপনার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীকে জানান। তারা ব্যক্তিগতকৃত পরামর্শ প্রদান করতে পারে এবং নিশ্চিত করতে পারে যে আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্যসেবা পরিকল্পনা সু-সমন্বিত কি না।
বাংলাদেশে অবস্থিত শশী হাসপাতালে ব্যথার জন্য আকুপাংচার চিকিৎসা দেওয়া হয়। এই চিকিৎসার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ব্যথার চিকিৎসা (Pain treatment in Dhaka, Bangladesh) করে সুস্থ্য হয়েছেন অনেক রোগী।
See More…