এলার্জিক রাইনাইটিস হচ্ছে নাকের সর্দি জনিত সমস্যা। এই রোগের কারণে নাক বন্ধ হয়ে যায়, নাক দিয়ে পানি পরা ইত্যাদি হতে পারে। মূলত এলার্জি থেকেই সৃষ্টি হয়ে থাকে। এটি মূলত একটি অস্বস্থিকর অবস্থা সৃষ্টি করে। এই সমস্যা সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে ভালো হয় থাকে, তবে অনেক ক্ষেত্রে এই সমস্যা দীর্ঘ মেয়াদে রুপ নিয়ে থাকে।
আকুপাংচার চিকিৎসার মাধ্যমে এলার্জিক রাইনাইটিস এর চিকিৎসা করা যায়। আকুপাংচার একটি ঔষধ বিহীন চীনা চিকিৎসা পদ্ধতি, যা বর্তমানে বাংলাদেশের ঢাকায় (acupuncture treatment in Dhaka, Bangladesh) রয়েছে।
এলার্জি জনিত সর্দি বা এলার্জিক রাইনাইটিস কি?
নাক বন্ধ হওয়া, নাক দিয়ে পানি পড়া, হাঁচি এবং চুলকানি সবই এলার্জি জনিত সর্দি (Allergic Rhinitis) এর লক্ষণ। যদিও নাকের এলার্জি জনিত সর্দি সাংঘাতিক কোনো রোগ নয়, তবে এটি দৈনন্দিন জীবনযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করে। প্রাথমিক অবস্থায় এলার্জি জনিত সর্দির ঘরোয়া উপায়ে চিকিৎসা নেয়া যায় তবে স্বাভাবিক দৈনন্দিন জীবনে এলার্জি জনিত কারণে বেশি সমস্যা দেখা দিলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া দরকার।
বাংলাদেশের সুনামধন্য আকুপাংচার বিশেষজ্ঞ ডা. এস. এম. শহীদুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে এলার্জিক রাইনাইটিস এর চিকিৎসা প্রদান (Allergic Rhinitis treatment in Dhaka, Bangladesh) করে আসছেন। তার হাত ধরে দেশ ও বিদেশের অনেক রোগী এলার্জিক রাইনাইটিস থেকে সুস্থ্যতা পেয়েছেন।
এলার্জিক রাইনাইটিস হওয়ার কারণ
এলার্জিক রাইনাইটিস মূলত বিভিন্ন জিনিসের প্রতি এলার্জি থেকে হয়ে থাকে। এলার্জির প্রতিক্রিয়ার কারণে শরীরে হিস্টামিন নামক একটি রাসায়নিক পদার্থ বের হয়ে আসে। হিস্টামিন নাকের ভেতরের চামড়ায় প্রদাহ সৃষ্টি করে ফলে নাকের ভেতরে প্রচুর পরিমাণে শ্লেষ্মা জাতীয় পিচ্ছিল তরল পদার্থ তৈরি হয়। যার থেকে হাঁচি এবং নাক থেকে পানি পরা সহ এলার্জিক রাইনাইটিস বা এলার্জি জনিত সর্দির বিভিন্ন লক্ষণ প্রকাশ পায়। বিভিন্ন কারণে এলার্জি হয়ে থাকে মানুষ ভেদে। নিচে এলার্জিক রাইনাইটিস হওয়ার কারণ গুলো দেওয়া হল:
- কসমেটিকস বা প্রসাধনী
- ফুলের পরাগরেণু
- পশু-পাখির লোম
- পুরানো বই বা সংবাদপত্রে মাইট
- বাড়ির ধুলো
- কাঠের গুঁড়া
- আটা ও ময়দার গুঁড়া
এছাড়াও সাধারণত চিংড়ী, কাঁকড়া, ইলিশ, বোয়াল, টুনা মাছ প্রভৃতি মাছ জাতীয় খাবার খাওয়ার কারণে এলার্জী হয়ে থাকে। গরুর দুধ, মুরগির ডিম, হাঁসের ডিম, গম, বাদাম, আলু, বেগুন এগুলো খেলেও ব্যক্তি বিশেষে এলার্জী হয়। শীতকালে এই ধরনের সমস্যা বেশি দেখা দেয়। কেউ কেউ সারাবছর এই ধরনের সমস্যায় ভুগে থাকে। বিশেষ করে শীতকালে শুষ্ক আবহাওয়া ও বাতাসের সাথে মিছে থাকা ধুলাবালি এই ধরনের সমস্যার তীব্র আকার ধারণ করে। এছাড়াও যানবাহন থেকে নির্গত কালো ধোঁয়া, কারখানার বিভিন্ন পদার্থ, ভাজা পোড়া ও বিভিন্ন ভাবে বেড়িয়ে আসা গন্ধ থেকে নাক চুলকানো, একনাগাড়ে কয়েকবার হাঁচি, কাশি হঠাৎ নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া সহ বিভিন্ন সমস্যার কারণে এলার্জির সমস্যা হয়ে থাকে।
এলার্জি জনিত সর্দি বা এলার্জিক রাইনাইটিস লক্ষণ
এলার্জি জনিত সর্দির বা এলার্জিক রাইনাইটিস লক্ষণ বলতে সাধারণত এলার্জি হয় এমন কোনো জিনিসের সংস্পর্শে আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই এর প্রতিক্রিয়া শুরু হতে থাকে। এলার্জি জনিত সর্দি বা এলার্জিক রাইনাইটিস এর লক্ষণ হল:
- ঘন ঘন হাঁচি, কাশি
- নাক দিয়ে পানি পড়া
- নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া
- নাকের ভিতর চুলকানি
- ঘাড়ে ব্যথা (Neck Pain)
- চোখ দিয়ে পানি পড়া
আবার এলার্জি জনিত কারণে গুরুতর লক্ষণ দেখা দিতে পারে। গুরুতর লক্ষণ সমূহের মধ্যে রয়েছেঃ
- মাথাব্যথা (Migraine)
- সাইনাসের (Sinus) কারণে মুখে ব্যথা
- চোখের নিচে ফোলা ভাব বা চোখ লাল হওয়া
- নাক, কান ও গলায় চুলকানি
- ঘুমের সমস্যা হওয়া
- শরীর ক্লান্তি হওয়া
এলার্জিক রাইনাইটিস থেকে মুক্তির ঘরোয়া উপায়
এলার্জিক রাইনাইটিস থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে প্রথমত ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে। তবে মৃদু এলার্জিক রাইনাইটিস হলে কিছু ঘরোয়া উপায় মেনে চললে এই রোগ থেকে কিছুটা নিরাময় পাওয়া যায়। নিচে উপায় গুলো দেওয়া হল:
- এলার্জি উদ্রেককারী জিনিসগুলো এড়িয়ে চলা
- ফ্রীজের ঠান্ডা পানীয় না খাওয়া
- গরম পানির ভাপ নাক দিয়ে টানুন ও মুখ দিয়ে ছাড়ুন
- গরুর মাংস, ইলিশ মাছ, চিংড়ি মাছ, বেগুন, হাঁসের ডিম ইত্যাদি এলার্জি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে
আকুপাংচার চিকিৎসার মাধ্যমে এলার্জি জনিত সর্দি বা এলার্জিক রাইনাইটিস থেকে শজে মুক্তি পাওয়া যায়। এই চিকিৎসা মাধ্যমে কোন প্রকার ঔষধ ছাড়া এলার্জিক রাইনাইটিস বা নাকের এলার্জি (Allergy treatment in Dhaka, Bangladesh) ভালো হয়। বাংলাদেশের সেরা আকুপাংচার চিকিৎসক ডা. এস. এম. শহীদুল ইসলাম এর তত্বাবধানে ঢাকার শশী হাসপাতালে আকুপাংচার চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। এ চিকিৎসা নিয়ে ইতিমধ্যে অনেকেই সম্পূর্ণ রূপে এলার্জিক রাইনাইটিস থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
এলার্জি জনিত সর্দি বা এলার্জিক রাইনাইটিস মুক্তিতে আকুপাংচার চিকিৎসা
আকুপাংচার চীনের একটি প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি। এটি আজ থেকে প্রায় ৫০০০ (পাঁচ হাজার) বছর আগে থেকে প্রচলন ও খুবই জনপ্রিয় এবং বর্তমান উন্নত বিশ্বে বিভিন্ন দেশে বহুলাংশে প্রচলন হচ্ছে। এটি অন্যন্যা চিকিৎসা পদ্ধতি থেকে সম্পূর্ণ বিকল্প একটি চিকিৎসা পদ্ধতি। কারণ আকুপাংচারের চিকিৎসা পদ্ধতি মূলত অতি পাতলা সুঁই এর মাধ্যমে মানব শরীরে নির্দিষ্ট স্থানে ফুটিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। গবেষণায় দেখা গেছে যে মানব শরীরে ৩৬১ টি নির্দিষ্ট পয়েন্ট আছে যেখানে আকুপাংচার করলে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। বরং শরীরে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে, শরীরে ব্যথা থাকলে তা দূর করে দেয়, ভালো ঘুমের জন্যও বেশ কার্যকর। এছাড়াও বিভিন্ন রোগ থেকে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আগের তুলনায় অনেকটা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।
এক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (World Health Organization) আকুপাংচারের মাধ্যমে ১০০ টির বেশি রোগের চিকিৎসার জন্য আকুপাংচার সুপারিশ করেছে, যার মধ্যে ৮০ টিরও বেশি চিকিৎসা বাংলাদেশের সেরা আকুপাংচার হাসপাতাল SUO XI Hospital এ দেওয়া হয়। এর মধ্যে এলার্জি জনিত সর্দি (Allergic rhinitis including hay fever) একটি। এলার্জি জনিত সর্দির বিভিন্ন উপসর্গ রয়েছে যা আকুপাংচার চিকিৎসা দেওয়ার ফলে এক ধরনের নতুন উদ্দীপনা তৈরি করে। এলার্জি জনিত সর্দির মত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ধীরে ধীরে বাড়িয়ে তোলে। এভাবে আকুপাংচার চিকিৎসার মাধ্যমে এলার্জি জনিত সর্দি থেকে মুক্তির উপায় নিশ্চিত করা যায়।
আকুপাংচার এর মাধ্যমে এলার্জির চিকিৎসা করা যায়। এই চিকিৎসা ব্যবস্থায় কোন প্রকার ঔষধের ব্যবহার করা হয় না। ডা. এস. এম. শহীদুল ইসলাম বাংলাদেশের একজন সুনামধন্য আকুপাংচার বিশেষজ্ঞ। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে ঔষধ বিহীন এলার্জির চিকিৎসা (Best allergy treatment in Bangladesh) প্রদান করে আসছে। দেশ সহ বিদেশে তার চিকিৎসায় সুস্থ্য রোগী রয়েছেন।
Frequently Asked Questions (FAQ)
নাকের এলার্জি বা এলার্জিক রাইনাইটিস কেন হয়?
এলার্জিক রাইনাইটিস মূলত বিভিন্ন জিনিসের প্রতি এলার্জি থেকে হয়ে থাকে। এলার্জির প্রতিক্রিয়ার কারণে শরীরে হিস্টামিন নামক একটি রাসায়নিক পদার্থ বের হয়ে আসে। হিস্টামিন নাকের ভেতরের চামড়ায় প্রদাহ সৃষ্টি করে ফলে নাকের ভেতরে প্রচুর পরিমাণে শ্লেষ্মা জাতীয় পিচ্ছিল তরল পদার্থ তৈরি হয়। যার থেকে হাঁচি এবং নাক থেকে পানি পরা সহ এলার্জিক রাইনাইটিস বা এলার্জি জনিত সর্দির বিভিন্ন লক্ষণ প্রকাশ পায়।
এলার্জিক রাইনাইটিস থেকে মুক্তির উপায়
এলার্জিক রাইনাইটিস থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে বেশ কিছু ঘরোয়া নিয়ম মেনে চললে এই রোগ কমানো যায়। এই নিয়ম গুলো হল, এলার্জি উদ্রেককারী জিনিসগুলো এড়িয়ে চলা, ফ্রীজের ঠান্ডা পানীয় না খাওয়া, এলার্জি জাতীয় খাবার যেমন: গরুর মাংস, ইলিশ মাছ, চিংড়ি মাছ, বেগুন, হাঁসের ডিম ইত্যাদি এড়িয়ে চলতে হবে।
এলার্জিক রাইনাইটিস এর লক্ষণ
এলার্জি জনিত সর্দির বা এলার্জিক রাইনাইটিস লক্ষণ বলতে সাধারণত এলার্জি হয় এমন কোনো জিনিসের সংস্পর্শে আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই এর প্রতিক্রিয়া শুরু হতে থাকে। এলার্জি জনিত সর্দি বা এলার্জিক রাইনাইটিস এর প্রধান লক্ষণগুলো হল ঘন ঘন হাঁচি বা কাশি, নাক দিয়ে পানি পড়া, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, নাকের ভিতর চুলকানি ইত্যাদি।
See More…
ঘাড় ব্যথার (Neck Pain) কারণ, লক্ষণ, এবং চিকিৎসা
পিএলআইডি সমস্যায় আধুনিক চিকিৎসা আকুপাংচার | Acupuncture is a modern treatment for PLID problems