মানুষের শরীরে রক্তচাপের একটি স্বাভাবিক মাত্রা রয়েছে। কখনো কখনো সেই মাত্রা কম বেশি হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে সাধারণত আমরা সচেতন থাকি, কিন্ত নিম্ন রক্তচাপ বা লো প্রেশার (Low Blood Pressure) নিয়ে আমাদের সচেতন হওয়া প্রয়োজন। চলুন জেনে নেই কিভাবে নিম্ন রক্তচাপ বা লো প্রেশার হলে করনীয়, কারন ও লক্ষণ।
আকুপাংচারের মাধ্যমে লো প্রেশার বা নিম্ন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আকুপাংচার একটি চীনা চিকিৎসা পদ্ধতি। এই পদ্ধতি ব্যাবহার করে কোন প্রকার ঔষধ ছাড়া চিকিৎসা করা হয়। বাংলাদেশের ঢাকায় অবস্থিত শশী হাসপাতালে আকুপাংচার চিকিৎসার মাধ্যমে নিম্ন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
লো প্রেসার বা নিম্ন রক্তচাপ (Hypotension / Low Blood Pressure) কী?
একজন সুস্থ ব্যক্তির স্বাভাবিক রক্তচাপ থাকে হচ্ছে 90/60 mmHg এবং 120/80 mmHg এর মধ্যে। যদি রক্তচাপ স্বাভাবিক 90/60 mmHg এর চেয়ে কম হয় তখন নিম্ন রক্তচাপ দেখা দেয়। নিম্ন রক্তচাপ দেখা দিলে হঠাৎ মাথা ঘোরা বা অজ্ঞান হয়ে পড়ে যেতে পারেন। তবে কখনও কখনও, নিম্ন রক্তচাপের (Low Blood Pressure) কারণে মৃত্যুও হতে পারে।
লো প্রেসার বা নিম্ন রক্তচাপের কারণঃ
লো প্রেশার (Low Blood Pressure) কেন হয় বলতে, নিম্ন রক্তচাপ কোন একটি নির্দিষ্ট কারণে হয়ে থাকে না। এর বিভিন্ন কারন রয়েছে। তার মধ্যে ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ লো ব্লাড প্রেশার বা নিম্ন রক্তচাপ এর অন্যতম কারন।
এগুলো ছাড়াও বিভিন্ন কারণে নিম্ন রক্তচাপ হতে পারে। সেগুলো নিম্নে আলোচনা করা হল:
আবার কিছু রোগের কারণে নিম্ন রক্তচাপ হতে পারে যেমন- হার্ট ফেইলিউর, হার্টের ভালভ ডিজিজ, হার্ট অ্যাটাক, কার্ডিওমেগালি, পারকিনসন ডিসিজ (Parkinson’s Disease), হরমোনাল অসমাঞ্জস্যতা।
লো প্রেশার বা নিম্ন রক্তচাপের লক্ষণ
মানব দেহে রক্তের চাপ স্বাভাবাকি থাকাটা খুবই জরুরী একজন মানুষের সুস্থ্য থাকার জন্য। রক্তের চাপ কমে বা বেড়ে গেলে শরীরে নানা রকম অসুস্থতা দেখা যায়। যেমনটা লো প্রেশার বা নিম্ন রক্ত চাপের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। শরীরে রক্তের চাপ স্বাভাবিকের থেকে কমে গেলে মানুষ অসুস্থ হয়ে পরে এবং নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়।
লো প্রেশার বা নিম্ন রক্তচাপের লক্ষণগুলো নিচে দেওয়া হল:
নিম্ন রক্তচাপের প্রতিকারে ঘরোয়া উপায়
নিম্ন রক্তচাপ মানব শরীরের জন্য খুবই খারাপ। এর ফলে নানা রকম অসুস্থতা দেখা দেয়। লো প্রেশার হলে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে হবে। তবে বেশ কিছু ঘরোয়া উপায়ে লো প্রেশার বা নিম্ন রক্তচাপ থেকে প্রতিকার পাওয়া যায়, সেগুলো নিচে দেওয়া হল:
- স্যুপ, ফলের রস, দুধ, লবণ ও চিনি দিয়ে লেবুর শরবত ইত্যাদি খাওয়া
- স্যালাইন খাওয়া, তবে অবশ্যই নিয়ম মেনে স্যালাইন গুলিয়ে খেতে হবে।
- আয়রন, ভিটামিন সি, বি১২ জাতীয় খাবার খেতে হবে
- শাক, মেটে আলু, মসুর ডাল ও সিদ্ধ ডিম জাতীয় খাবার খেতে হবে
- মুরগির মাংস, সামুদ্রিক মাছ ইত্যাদি খাবার
- শাক সবজি যেমন লালশাক, পালংশাক, কচুশাক, শিমের বিচি, মিষ্টিকুমড়ার বিচি ইত্যাদি খাবার খেতে হবে
লো প্রেসার বা নিম্ন রক্তচাপ এর প্রতিরোধে আকুপাংচারের ভূমিকাঃ
আকুপাংচার হল একটি ঐতিহ্যবাহী চীনা চিকিৎসা অনুশীলন যা বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় এবং থেরাপিউটিক প্রভাবকে উদ্দীপিত করার জন্য শরীরের নির্দিষ্ট পয়েন্টগুলিতে পাতলা সূঁচ দিয়ে উদ্দীপনা তৈরি করা হয়। যদিও আকুপাংচার সাধারণত বিভিন্ন স্বাস্থ্য অবস্থার জন্য ব্যবহৃত হয়।
নিম্ন রক্তচাপ জনিত রোগের ক্ষেত্রে আকুপাংচার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এই সূঁই অনেক পাতলা যা শরীরের গভীরে সামান্য চাপে প্রবেশ করে এবং শরীরকে উদ্দীপনিয়ায় সাহাজ্য করে।
হাইপোটেনশনের চিকিৎসায় আকুপাংচারের কার্যকারিতার বৈজ্ঞানিক প্রমাণ এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসা রয়েছে। আকুপাংচারের প্রতিক্রিয়া ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে পরিবর্তিত হতে পারে। জীবনধারা পরিবর্তন এবং খাদ্যতালিকাগত পরিবর্তনের সাথে সাথে আকুপাংচার চিকিৎসা গ্রহণের ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং নার্ভের জটিলতা দূর হয়।
নিম্ন রক্তচাপের অন্যান্য প্রচলিত চিকিৎসা যেমন খাদ্যতালিকাগত পরিবর্তন, ব্যায়াম এবং স্ট্রেস ম্যানেজমেন্টের সাথে একত্রে আকুপাংচারকে একটি পরিপূরক থেরাপি হিসাবে বিবেচনা করা হয়। আকুপাংচার স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে এবং স্ট্রেস কমাতে এবং শিথিলতা বাড়াতে সাহায্য করে, যা পরোক্ষভাবে রক্তচাপকে প্রভাবিত করতে পারে। এটা বিশ্বাস করা হয় যে আকুপাংচার কিছু নিউরোট্রান্সমিটার এবং হরমোন নিঃসরণকে প্রভাবিত করতে পারে। আকুপাংচার ফুসফুসের কার্যকারিতা উন্নত করার পাশাপাশি শরীরকে আরও দক্ষ করে তোলার একটি চমৎকার উপায়। আকুপাংচারের মাধ্যমে কোষগুলি বৈদ্যুতিক শক দিয়ে উদ্দীপিত হয়,ফলে উক্ত সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। এই চিকিৎসাটি শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্ত প্রবাহ বাড়ায় এবং বিভিন্ন হরমোন নিঃসরণ করে যা অবস্থার উন্নতি করতে পারে।
হাইপোটেনশন পরিচালনার জন্য আকুপাংচার একটি পরিপূরক পদ্ধতি হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। আপনার নিম্ন রক্তচাপের ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনায় কোনো পরিবর্তন করার আগে সর্বদা আপনার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর সাথে পরামর্শ করুন। আপনার নির্দিষ্ট অবস্থার জন্য কোন চিকিৎসা এবং জীবনধারার পরিবর্তনগুলি সবচেয়ে উপযুক্ত সে সম্পর্কে তারা আপনাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করতে পারে ।
See More…
বুকের দুধ কম তৈরি হওয়ার (Lactational deficiency) কারণ
যৌন সমস্যা হলে করণীয় | যৌন সমস্যার চিকিৎসা | যৌন সমস্যার ওষুধ | আকুপাংচার
Frequently Asked Questions (FAQ)
ওষুধনিম্ন রক্তচাপের লক্ষণ কি?
নিম্ন রক্তচাপ বা লো প্রেশারের বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে যেমন: মাথা ঘোরা (Vertigo), হালকা মাথা ব্যথা (Mild Headache), শ্বাস নিতে অসুবিধা (Difficulty Breathing, ঝাপসা দৃষ্টি (Blurred Vision), অজ্ঞান হওয়া (Unconsciousness), বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া (Nausea/Vomiting's), ক্লান্তি (Fatigue) ইত্যাদি।
নিম্ন রক্তচাপ হলে কি খাওয়া উচিত?
লো প্রেশার বা নিম্ন রক্তচাপ বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে। তবে বেশ কিছু ঘরোয়া খাবার রয়েছে যা লো প্রেশার বা নিম্ন রক্তচাপ প্রতিকারে ব্যপক কাজে দেয়, সেগুলো হল: ডিম, স্যুপ, ডাল, দুধ, ভিটামিন-সি জাতীয় খাবার, শাক সবজি ইত্যাদি।
নরমাল ব্লাড প্রেসার কত?
একজন সুস্থ ব্যক্তির স্বাভাবিক রক্তচাপ থাকে হচ্ছে 90/60 mmHg এবং 120/80 mmHg এর মধ্যে। যদি রক্তচাপ স্বাভাবিক 90/60 mmHg এর চেয়ে কম হয় তখন নিম্ন রক্তচাপ দেখা দেয়। নিম্ন রক্তচাপ দেখা দিলে হঠাৎ মাথা ঘোরা বা অজ্ঞান হয়ে পড়ে যেতে পারেন। তবে কখনও কখনও, নিম্ন রক্তচাপের (Low Blood Pressure) কারণে মৃত্যুও হতে পারে।