ইরেক্টাইল ডিসফাংশন কী? (Erectile dysfunction)
ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বা ইডি (ED) হচ্ছে একজন পুরুষের পুরুষত্বহীনতা বা লিঙ্গের উত্থানজনিত সমস্যাকে বোঝায়। অর্থাৎ যখন একজন পুরুষের যৌন মিলনের সময় দ্রুত বীর্যপাত, যৌন মিলনে অনাগ্রহ কিংবা উত্থান জনিত সমস্যায় ভোগে থাকেন তখন তাকে ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বলা হয়। একজন পুরুষের মাঝে মাঝে উত্থানজনিত সমস্যাগুলি সাধারণ হলেও, ক্রমাগত বা ঘন ঘন ইরেক্টাইল ডিসফাংশন হলে তা স্বাভাবিক নয় এবং এর জন্য সঠিক চিকিৎসার প্রয়োজন।
আকুপাংচার চিকিৎসার মাধ্যমে ইরেক্টাইল ডিসফাংশন (ED) বা পুরুষত্বহীনতা দূর করা যায়। এই রোগের সবচেয়ে কার্যকরী চিকিৎসা হল আকুপাংচার। বাংলাদেশের শশী হাসপাতালে রয়েছে এই রোগের আধুনিক সমাধান। আকুপাংচার চিকিৎসার মাধ্যমে ED থাকে মুক্তি পেয়েছেন অনেক রোগী।
ইরেক্টাইল ডিসফাংশন হওয়ার কারণ
ইরেক্টাইল ডিসফাংশন (ED) এমন একটি সমস্যা, যেখানে লিঙ্গে যথেষ্ট উত্থান তৈরি হয় না বা প্রয়োজনীয় সময় পর্যন্ত থাকে না। এই অবস্থা শুধু শারীরিক নয় বরং মানসিক, হরমোনজনিত ও স্নায়ুবিক একাধিক কারণের সঙ্গে সম্পর্কিত। তাই ED বোঝার জন্য শরীরের ভেতরের সামগ্রিক ভারসাম্য দেখা জরুরি।
● রক্তসঞ্চালন কমে যাওয়া: উত্থানের জন্য লিঙ্গে পর্যাপ্ত রক্তপ্রবাহ প্রয়োজন। উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, ধমনী সংকোচন, ডায়াবেটিস এসব কারণে রক্তপ্রবাহ কমে গেলে উত্থান দুর্বল হয়। এটি ED-এর সবচেয়ে সাধারণ কারণগুলোর একটি।
● হরমোনের ভারসাম্যহীনতা: টেস্টোস্টেরন কমে গেলে যৌন আগ্রহ হ্রাস পায় এবং উত্থানজনিত সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়া থাইরয়েড ও অন্যান্য হরমোনের গণ্ডগোলও যৌনক্ষমতায় সরাসরি প্রভাব ফেলে।
● মানসিক চাপ, উদ্বেগ ও সম্পর্কগত সমস্যা: স্ট্রেস, উদ্বেগ, অতিরিক্ত চিন্তা, পারফরম্যান্স ফিয়ার বা সম্পর্কের টেনশন এসবই মস্তিষ্কের স্বাভাবিক যৌন প্রতিক্রিয়া ব্যাহত করে। অনেক ক্ষেত্রে শারীরিকভাবে কোনো সমস্যা না থাকলেও মানসিক চাপ ED সৃষ্টি করতে পারে।
● স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যাবলি: স্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিষ্ক থেকে লিঙ্গে সংকেত পৌঁছে। তাই স্ট্রোক, স্পাইনাল কর্ড ইনজুরি, নিউরোপ্যাথি (বিশেষ করে ডায়াবেটিসে), পারকিনসনস রোগ ইত্যাদি অবস্থায় সংকেত দুর্বল হয়, ফলে উত্থান বজায় রাখা কঠিন হয়।
● অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন: ধূমপান, অ্যালকোহল, স্থূলতা, শারীরিক অনুশীলনের অভাব এসব কারণে রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়। ফলে ED-এর ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।
● কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ, অ্যান্টিডিপ্রেস্যান্ট, অ্যান্টিহিস্টামিন এবং কিছু মানসিক রোগের ওষুধ উত্থানে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। তবে কোনো ওষুধ নিজে থেকে বন্ধ না করে চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করাই উত্তম।
● দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক রোগ: ডায়াবেটিস, কিডনি বা লিভারের সমস্যা, উচ্চ কোলেস্টেরল, এমনকি দীর্ঘস্থায়ী ব্যথাও যৌন সক্ষমতায় প্রভাব ফেলে। এগুলো স্নায়ু বা রক্তনালীর কার্যকারিতা কমিয়ে ED সৃষ্টি করতে পারে।
ইরেক্টাইল ডিসফাংশনের কিছু সাধারণ লক্ষণ ও কখন ডাক্তার দেখানো জরুরি
ইরেক্টাইল ডিসফাংশন (ED) ধীরে ধীরে শুরু হতে পারে আবার হঠাৎ করেও দেখা দিতে পারে। শরীরের রক্তসঞ্চালন, হরমোন, স্নায়ু, এমনকি মানসিক অবস্থার পরিবর্তনের কারণে এই সমস্যা তৈরি হয়। শুরুতে অনেক পুরুষ এটিকে সাময়িক সমস্যা ভেবে গুরুত্ব দেন না, কিন্তু বারবার হলে এটি শরীরের ভেতরে লুকিয়ে থাকা আরও বড় কারণের সংকেত হতে পারে।। তাই ED-কে গুরুত্ব দিয়ে লক্ষণগুলো ঠিকভাবে বোঝা প্রয়োজন।
ED-এর লক্ষণ
- উত্থান তৈরি হতে সমস্যা হওয়া: যদিও যৌন উত্তেজনা থাকে, তবুও পর্যাপ্ত দৃঢ় উত্থান না হওয়া ED-এর সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ। এটি রক্তপ্রবাহ কমে যাওয়া বা স্নায়ু সংকেত দুর্বল হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।
- উত্থান বজায় রাখতে না পারা: শুরুতে উত্থান হলেও তা দ্রুত নরম হয়ে গেলে যৌন সম্পর্ক সম্পন্ন করা কঠিন হয়ে যায়। এই ধরনের সমস্যা রক্তনালীর কার্যকারিতা বা মানসিক চাপ—উভয়ের কারণেই হতে পারে।
- যৌন ইচ্ছা কমে যাওয়া: Libido হঠাৎ কমে গেলে তা অনেক সময় হরমোন পরিবর্তন বা মানসিক চাপের ইঙ্গিত দেয়। দীর্ঘদিন ধরে যৌন আগ্রহ কম থাকলে ED আরও বেড়ে যেতে পারে।
- সকালে স্বাভাবিক উত্থান কমে যাওয়া: সুস্থ পুরুষের ক্ষেত্রে সকালে অনায়াসে উত্থান দেখা যায়। এটি ধীরে ধীরে কমে গেলে শরীরের হরমোন বা রক্তসঞ্চালনে সমস্যা থাকতে পারে।
- যৌন বিষয়ে উদ্বেগ, ভয় বা মানসিক অস্বস্তি: ED-এর সাথে মানসিক কারণ গভীরভাবে জড়িত। আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি, ব্যর্থতার ভয় বা অতিরিক্ত চিন্তা শরীরের স্বাভাবিক যৌন প্রতিক্রিয়া ব্যাহত করতে পারে।
কখন ডাক্তার দেখানো জরুরি
- সমস্যা এক–দুই মাস স্থায়ী হলে: অস্থায়ী স্ট্রেস বা ক্লান্তিতে সাময়িক সমস্যা হতে পারে। কিন্তু কয়েক সপ্তাহ পরও উন্নতি না হলে চিকিৎসকের মূল্যায়ন প্রয়োজন।
- ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা হৃৎরোগ থাকলে: এই রোগগুলো রক্তনালী ও স্নায়ুকে দুর্বল করে, যা ED-এর বড় কারণ। তাই ED অনেক সময় ভবিষ্যৎ কার্ডিওভাসকুলার সমস্যার আগাম সতর্কতা হতে পারে।
- উত্থানের সময় ব্যথা, বক্রতা বা আকার পরিবর্তন হলে: এটি Peyronie’s disease বা টিস্যুর ভেতরে জমাট ক্ষতের লক্ষণ হতে পারে। দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন।
- হঠাৎ করে যৌনক্ষমতা কমে গেলে: হরমোনের অস্বাভাবিক পরিবর্তন, স্নায়ু ইনজুরি বা গুরুতর মানসিক চাপ এমন পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে যা উপেক্ষা করা উচিত নয়।
- সমস্যা ব্যক্তিগত সম্পর্ক বা মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেললে: যৌন সমস্যা থেকে দাম্পত্য টানাপোড়েন, আত্মসম্মানহানি বা হতাশা তৈরি হলে দ্রুত বিশেষজ্ঞের সহায়তা নিতে হবে।
আপনি যদি এই ধরনের লক্ষণগুলি মাঝে মাঝে অনুভব করে থাকেন তা স্বাভাবিক কারণ হলেও, যদি ঘন ঘন এই ধরনের লক্ষণগুলি দেখা দেয় তা স্বাভাবিক নয় সেক্ষেত্রে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। কারণ একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এই রোগের রোগ নির্ণয় ও ভালো পরামর্শ দিতে পারেন।
ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বা পুরুষত্বহীনতা প্রতিরোধে আকুপাংচার চিকিৎসাঃ
আকুপাংচার চীনে প্রায় ৫ হাজার বছর আগে আবিষ্কৃত ও জনপ্রিয় একটি চিকিৎসা পদ্ধতি। এটি বর্তমানে প্রায় বহু দেশে প্রচলিত। অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতি যেখানে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না, সে সকল রোগের ক্ষেত্রে আকুপাংচার চিকিৎসা অত্যন্ত চমৎকার কার্যকরী ভূমিকা রাখতেছে। আকুপাংচার চিকিৎসা পদ্ধতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক কার্যকরী হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করে। যেখানে কোনো প্রকার ওষুধ দেওয়া হয় না, মূলত এটি একটি বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি।
গবেষণায় দেখা গেছে, মানব শরীরে ৩৬১ টি নির্দিষ্ট আকুপয়েন্ট রয়েছে। যা মানব শরীরের ঐ নির্দিষ্ট আকুপয়েন্টে সূক্ষ্ম সুচ ফুটিয়ে এই চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। সুচ ফুটানোর আগে পরিষ্কার করে নেওয়া হয়। ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বা ইডি সমস্যার ক্ষেত্রেও আকুপাংচার চিকিৎসা দেওয়া হয়। শরীরের নির্দিষ্ট আকুপয়েন্টে আকুপাংচার করার ফলে পেশীর ওই স্থানটি উদ্দীপ্ত হয়, রক্ত চলাচল বৃদ্ধি ঘটায় এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
বাংলাদেশে এমন একটি অন্যতম প্রতিষ্ঠান হল শশী হাসপাতাল। এটি ঢাকা শান্তিনগর চৌরাস্তাতে অবস্থিত। শশী হাসপাতালে আকুপাংচারের মাধ্যমে উপরে উল্লেখিত ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বা ইডি সমস্যার রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। আকুপাংচারের পাশাপাশি পি শর্ট, লিনিয়ার শক ওয়েভ ও লীক ভেজিটেবল দেওয়া হয়। যার ফলে রোগী একটি সমন্বিত চিকিৎসার মাধ্যমে অতি দ্রুত সুস্থ হয় এবং অনেক রোগী সুস্থ হয়ে যাচ্ছে।
আপনি এই ধরনের ইডি ও যেকোনো ব্যথার সমস্যা নিয়ে আসতে পারেন, এসে চিকিৎসা নিতে পারেন। মানবতার সেবায় সর্বদা শশী হাসপাতাল আপনার পাশে রয়েছে। বিস্তারিত জানতে আমাদের ওয়েবসাইট http://www.suoxihospital.com ভিজিট করুন।
See More…
বুকের দুধ কম তৈরি হওয়ার (Lactational deficiency) কারণ
যৌন সমস্যা হলে করণীয় | যৌন সমস্যার চিকিৎসা | যৌন সমস্যার ওষুধ | আকুপাংচার