মানবদেহের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গের নাম কিডনি (Kidney) বাংলায় যাকে বলে বৃক্ক। দেখতে দুটি শিমের আকৃতির মত। কিডনি আকারে এক একটি আমাদের হাতের মুষ্টির মত। মানুষের মেরুদণ্ডের প্রতিটি পাশে একটি করে পাঁজরের খাঁচার নীচে অবস্থিত, যার প্রধান কাজ হচ্ছে শরীরের রক্তকে পরিশোধিত করে প্রস্রাবের মাধ্যমে বর্জ্য অপসারণ করা। কোন কারণে কিডনি অকার্যকর হয়ে পড়লে শরীরে মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি হয়।
আকুপাংচার কিডনি ব্যথার চিকিৎসার জন্য খুবই কার্যকরী। এই চিকিৎসার মাধ্যমে কোন প্রকার ঔষধ ছাড়া কিডনি ব্যথা নিরাময় (Best renal pain treatment without medicine) করা যায়। বাংলাদেশে সেরা আকুপাংচার ডাক্তার ডা. এস. এম. শহীদুল ইসলাম কোন প্রকার ঔষধ ছাড়া কিডনি ব্যথার চিকিৎসা (Renal pain specialist in Dhaka, Bangladesh) করে থাকেন।
কিডনি ব্যথার কারণ
প্রতিদিন গড়ে ২ টি কিডনি আমাদের শরীরের ২০০ লিটার রক্ত পরিশোধিত করে এবং রক্ত থেকে বর্জ্য নিঃসরণ করে থাকে। যে সকল কারণে কিডনি ব্যথা বা অকার্যকর হয়ে পড়ে বা তার কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে সেই গুলিই হচ্ছে কিডনি অসুখ। অসুস্থ বা অকার্যকর কিডনি মানুষের শরীরে দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক অসুস্থতা সৃষ্টি করে যার কারণে আক্রান্ত ব্যক্তি ধুকে ধুকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। তাই কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানা থাকলে প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় করে সুস্থ্য থাকা যায়। যে সকল কারণে কিডনি অসুস্থ হয়ে থাকে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
- টাইপ ১ বা টাইপ ২ ডায়াবেটিস
- উচ্চ রক্তচাপ
- পলিসিস্টিক কিডনি রোগ বা অন্যান্য উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত কিডনি রোগ
- গ্লোমেরুলোনফ্রাইটিস (Glomerulo nephritis), কিডনির ফিল্টারিং ইউনিটের প্রদাহ (গ্লোমেরুলি
- বর্ধিত প্রস্টেট, কিডনিতে পাথর এবং কিছু ক্যান্সারের মতো অবস্থা থেকে মূত্রনালীতে দীর্ঘস্থায়ী বাধা
- ভেসিকোরেটেরাল রিফ্লাক্স, এমন একটি অবস্থা যার ফলে প্রস্রাব পুনরায় কিডনিতে ফিরে যায়
- বারবার কিডনি সংক্রমণ, যাকে পাইলোনেফ্রাইটিসও বলা হয়
- জন্মগত কিডনি এবং মূত্রনালীর অস্বাভাবিকতা
- অটোইমিউন রোগ প্রভৃতি।
কিডনি ব্যথার লক্ষণ
কিডনি রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে তেমন কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না। ধীরে ধীরে কিডনির কার্যক্ষমতা হ্রাস পেতে থাকলে লক্ষণগুলো দেখা দিতে শুরু করে। কোন কারণে শরীরের রুটিন পরীক্ষা, যেমন রক্ত বা প্রস্রাব পরীক্ষা করা হলে প্রাথমিক পর্যায়ে কিডনি রোগের সম্ভাব্য সমস্যা সনাক্ত করা সম্ভব হয় এবং চিকিৎসায় ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। তবে পরবর্তী পর্যায়েই মূলত রোগের লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়, যার মধ্যে রয়েছে-
- ওজন হ্রাস ও ক্ষুধা হ্রাস
- ফোলা গোড়ালি, পা বা হাতে পানি এসে ফোলা ভাব (oedema)
- প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়া
- প্রস্রাবের প্রয়োজন বেড়ে যাওয়া (বিশেষ করে রাতে
- ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া অথবা প্রস্রাব কমে যাওয়া দুটোই কিডনির সমস্যার লক্ষণ। শরীর থেকে পানি বের করা ছাড়াও পানি শুষে নেয়ার কাজও করে কিডনি। সেটি করতে না পারলে বেশি প্রস্রাব হয়ে থাকে। প্রস্রাবের রঙ লালচে হলে, প্রস্রাবে ফেনা ভাব হলে। কিডনিতে পাথর, ক্যান্সার, টিউমারের কারণে প্রস্রাবের সাথে রক্ত যেতে পারে। কিডনি’র সমস্যা হলে শরীর থেকে প্রোটিন বেশি বের হয়ে যায় তাই ফেনা ভাব হয়।
- শ্বাসকষ্ট
- ক্লান্তি
- ঘুমাতে অসুবিধা বা অনিদ্রা
পানি বেশি খেলে কি কিডনি ভালো থাকে?
একজন মানুষের পানি কতটুকু খেতে হবে, তা নির্ভর করে তার কাজের ধরন, দেহের আকার, পরিবেশ, আবহাওয়া ইত্যাদির ওপর। পর্যাপ্ত পানি পান কিডনিকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। তবে জানেন কি অতিরিক্ত পানি পান করলে কিন্তু কিডনির ওপর চাপ পড়ে, যা ক্ষতির কারণ হতে পারে। স্বাভাবিক আবহাওয়ায় দৈনন্দিন আট গ্লাস পানি পানই যথেষ্ট। তবে অতিরিক্ত ঘাম হলে পানি খাওয়ার পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খেলে কিডনিতে পাথর হয় না এবং এর স্বাভাবিক কার্যক্রম ঠিক থাকে।
কিডনি ব্যথা নিরাময়ে আকুপাংচার চিকিৎসা
আকুপাংচার হল একটি ঐতিহ্যবাহী চীনা চিকিৎসা অনুশীলন যা বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় এবং থেরাপিউটিক প্রভাবকে উদ্দীপিত করার জন্য শরীরের নির্দিষ্ট পয়েন্টগুলিতে পাতলা সূঁচ দিয়ে উদ্দীপনা তৈরি করা হয়। আকুপাংচার সাধারণত বিভিন্ন স্বাস্থ্য অবস্থার জন্য ব্যবহৃত হয়। কিডনি ব্যথা রোগের ক্ষেত্রে আকুপাংচার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এই সূঁই অনেক পাতলা যা শরীরের গভীরে সামান্য চাপে প্রবেশ করে এবং শরীরকে উদ্দীপিত করে।
কিডনি ব্যথার চিকিৎসায় আকুপাংচারের কার্যকারিতার বৈজ্ঞানিক প্রমাণ এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসা রয়েছে। আকুপাংচারের প্রতিক্রিয়া ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে পরিবর্তিত হতে পারে। জীবনধারা পরিবর্তন এবং খাদ্যতালিকাগত পরিবর্তনের সাথে সাথে আকুপাংচার চিকিৎসা গ্রহণের ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং নার্ভের জটিলতা দূর করে। আকুপাংচার অনুশীলনকারীরা কিডনির ব্যথা উপশম নির্দিষ্ট আকুপাংচার পয়েন্টগুলি লক্ষ্য করে আকুপাংচার সুঁই প্রদান করা হয়। এই পয়েন্টগুলি ব্যথা উপশম এবং শিথিলকরণের সাথে যুক্ত।
আকুপাংচার শরীরের প্রাকৃতিক ব্যথানাশক এন্ডোরফিন নিঃসরণকে প্রচার করে কিডনির ব্যথা পরিচালনা করতে সাহায্য করে। এটি প্রভাবিত এলাকায় পেশী টান এবং প্রদাহ কমাতে পারে। আকুপাংচার টিএমজে ব্যথা এবং সম্পর্কিত অবস্থার উপশম করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
এছাড়া ব্যথা জনিত বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে আকুপাংচার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমরা ব্যথার জন্য আমরা বিভিন্ন রকমের ওষুধ খেয়ে থাকি। কিন্তু অতিরিক্ত ব্যথার ওষুধ খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকার হতে পারে। এর ফলে শরীর ফুলে যায় এবং কিডনির বিভিন্ন রকম সংক্রমণ দেখা দিতে পারে। আকুপাংচার একটি সম্পূর্ণ ঔষধ বিহীন চিকিৎসা পদ্ধতি। এই চিকিৎসা গ্রহণের ফলে শরীরের মধ্যে উদ্দীপনার পাশাপাশি কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। অনেকেই ব্যথাজনিত বিভিন্ন সমস্যার জন্য দীর্ঘ সময় যাবত ব্যথার ওষুধ খেয়ে থাকেন। আকুপাংচার তাদের জন্য একটি বিকল্প চিকিৎসা হতে পারে।
আকুপাংচার চিকিৎসার মাধ্যমে বাংলাদেশে কিডনি ব্যথার চিকিৎসা (Renal Pain treatment in Dhaka, Bangladesh) করা হয়। আকুপাংচার একটি ঔষধ বিহীন (Non medicine treatment in Bangladesh) চিকিৎসা। এই মাধ্যমে প্রায় ৫০০০ বছর পূর্বে থেকে চিকিৎসা প্রদান করা হয়ে আসছে। দেশের সুনামধন্য আকুপাংচার বিশেষজ্ঞ ডা. এস. এম. শহীদুল ইসলাম (Best acupuncture treatment in Dhaka, Bangladesh) থেকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য হয়েছেন অনেকেই।
See More…
ভেরিকোজ ভেইন কি? কাদের ঝুঁকি রয়েছে, লক্ষণসমূহ, ঘরোয়া চিকিৎসা
চোখের রেটিনার সমস্যার (Choroidopathy, Central Serous) কারণ, লক্ষণ এবং আকুপাংচার চিকিৎসা