পিরিয়ড বা মাসিকের সময় পেটে ব্যথা এর সমস্যাটি নারীদের ক্ষেত্রে খুবই সাধারন একটি বিষয়। সাধারণত পিরিয়ড চলা কালীন তল পেটে এই ব্যাথা থাকে। তবে কিছু ক্ষেত্রে এই ব্যাথা অতি যন্ত্রণাদায়ক হয়ে থাকে এবং অনেক ক্ষেত্রে এর তীব্রতা অনেক বেশি বেড়ে যায়। তবে সবার ক্ষেত্রে এই ব্যাথা একই জায়গায় থাকে না।
দীর্ঘদিন এমন অস্বাভাবিক পিরিয়ডের ব্যাথার চিকিৎসা হিসেবে আকুপাংচার খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। আকুপাংচার একটি প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে কোন প্রকার ঔষধ ছাড়া মাসিকের ব্যাথা দূর করা যায়। বাংলাদেশে অবস্থিত শশী হাসপাতালে আকুপাংচার চিকিৎসার মাধ্যমে মাসিকের সময় পেটে ব্যথার চিকিৎসা করা হয়।
ডিসমেনোরিয়া কি? (What is Dysmenorrhea)
মাসিকের ব্যথা অত্যন্ত বেদনাদায়ক যাকে ডিসমেনোরিয়া (Dysmenorrhea) বলা হয়। এটি গ্রীক শব্দ ডিস (Dys) ও মেনোরিয়া (Menorrhea) শব্দ যোগে এসেছে। ডিস শব্দের অর্থ ‘ব্যথা বা যন্ত্রণা’ আর মেনোরিয়া অর্থ ‘মাসিকের রক্তপ্রবাহ’। অর্থাৎ একজন নারীর মাসিক শুরু হওয়ার আগে বা মাসিক চলাকালীন সময় যে দুঃসহ ব্যথা হয় তাকে ডিসমেনোরিয়া বলে। আবার রক্তস্রাব শেষ হওয়ার সাথে সাথে ব্যথাও কমে যায়। এই ব্যথার যন্ত্রণায় প্রত্যেক নারী ভুগে থাকেন।
মাসিকের সময় পেটে ব্যাথার লক্ষণ
মাসিকের সময় তলপেটে ব্যথা হয়ে থাকে। কখনও কখনও এই ব্যথা কোমরের দিকে চলে যায়। ফলে মাথা ব্যথা, স্তন ব্যথা, শরীরের দুর্বলতা, ঘাড়ে ব্যথা, বমি বমি ভাব প্রভৃতি সমস্যা দেখা দিতে পারে। ডিসমেনোরিয়া দুই ধরনের ক) প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়া ও খ) সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া
ক) প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়া –
সাধারণত একজন নারীর ২৫ বছরের আগে এই ব্যথা হয়। পিরিয়ডের সাথে সাথে মাসিকের সময় পেটে ব্যথা, তীব্র হয় এবং বমিও হতে পারে। এই ব্যথা সাধারণত ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত থাকে। প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়া হলে যেসব লক্ষণ দেখা দেয় তা হলোঃ
- তলপেটে ব্যথা
- বমি বমি ভাব
- উদরাময়
- উদ্বেগ বা প্রদাহ
- উরু বা নিতম্বে ব্যথা
- মাথা ব্যথা বা ঝিনঝিন করা
খ) সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া –
এটি বয়স্ক নারীদের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। যা সুনির্দিষ্ট কিছু কারণে হয়। যেমন – ওভারিয়ান সিস্ট, এন্ডোমেট্রিওসিস, ফাইব্রয়েড, যোনি পথে সংক্রমণ প্রভৃতি কারণে সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া হয়ে থাকে। সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়ার কিছু লক্ষণ হলোঃ
- পেটে ব্যাপক ব্যথা
- সর্দি ও জ্বর হতে পারে
- যৌন মিলনের সময় ব্যথা হওয়া
- রক্ত জমাট বাঁধা
- পিরিয়ড অনিয়ম
- প্রস্রাবের সময় প্রদাহ
ডিসমেনোরিয়া বা পিরিয়ডের ব্যাথা প্রতিরোধে আকুপাংচারের ভূমিকা
আকুপাংচার একটি প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী চীনা চিকিৎসা পদ্ধতি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১০০ টিরও বেশি অবস্থার জন্য আকুপাংচার সুপারিশ করেছে। আকুপাংচারের মাধ্যমে ডিসমেনোরিয়া সমস্যার সমাধান (Dysmenorrhea treatment by acupuncture) দেয়। আকুপাংচারের মাধ্যমে শরীরের নির্দিষ্ট আকুপয়েন্টে অতি পাতলা সূঁচ ফুটানো হয়। এই ক্ষেত্রে, আকুপাংচার দেওয়ার আগে জায়গাটি পরিষ্কার করে নেওয়া হয়। আকুপাংচার ব্যথা কমাতে, প্রদাহ কমাতে, পেশীর খিঁচুনি উপশম করতে এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
বাংলাদেশে তেমনই একটি প্রতিষ্ঠান হল শশী হাসপাতাল। যেখানে প্রধান চিকৎসা ব্যবস্থা হল আকুপাংচার। যেখানে বাংলাদেশের সেরা আকুপাংচার স্পেশালিষ্ট ডা. এস.এম. শহীদুল ইসলামের তত্বাবধানে ডিসমেনোরিয়ার জন্য আকুপাংচার চিকিৎসা দেওয়া হয়। এছড়ামাসিকের সময় পেটে ব্যথা বা ডিসমেনোরিয়া রোগ নিরাময়ে অনেক সময় আকুপ্রেশার চিকিৎসা প্রদান করা হয়। আকুপ্রেশার দেওয়ার ফলে স্মৃতি শক্তি বাড়ে, চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়ে, কানের শ্রবণ শক্তি বাড়ায়, চেহারার উজ্জ্বলতা বাড়ায়, ঘাড়ের প্রদাহ কমায়, মাথা ব্যথা কমে এবং ঘুমের উন্নতি হয়। আপনিও শশী হাসপাতালে আসতে পারেন, এসে চিকিৎসা নিতে পারেন। শশী হাসপাতাল আপনার সেবার জন্য সবসময় প্রস্তুত।
Frequently Asked Questions (FAQ)
মাসিকের সময় পেটে ব্যথা হলে করণীয়?
মাসিকের সময় পেটে ব্যাথা হওয়াটা স্বাভাবিক একটা বিষয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে তীব্র ব্যাথা হতে পারে। এক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। এ ছাড়াও ঘরোয়া কিছু উপায়ে প্রাথমিক ভাবে ব্যাথা উপশম করা যেতে পারে। সেগুলো হল: হিটিং প্যাড ব্যাবহার করা, পেটের নিচের অংশে আলতোভাবে ম্যাসাজ করা, যোগব্যায়াম, প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা ইত্যাদি।
পিরিয়ডের ব্যথা কতক্ষণ স্থায়ী হয়?
সাধারণত পিরিয়ড শুরু হওয়ার থেকে শুরু হয় এই ব্যাথা। আবার কারো ক্ষেত্রে এ ব্যাথা মাসিক হওয়ার দুই একদিন আগেও শুরু হতে পারে। মাসিক বা পিরিয়ডের ব্যাথা সাধারণত ৪৮ থেকে ৭২ ঘন্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। তবে কিছু ক্ষেত্রে এর সময় আরও বেশি হতে পারে। মূলত, মাসিকের সময় বেশি রক্তক্ষরণের সময় ব্যাথা বেশি হয়।
পিরিয়ডের সময় কোথায় কোথায় ব্যথা হয়?
মাসিক বা পিরিয়ডের সময় সাধারণত পেটের নিচের অংশে অর্থাৎ তলপেট, জরায়ুর চারপাশে হয়ে থাকে। অনেক সময় এ ব্যাথা কোমর, উরু, পা বা পিঠেও ছড়িয়ে যেতে পারে।