আমাদের দেহের রক্তের মধ্যে অনেক উপাদান রয়েছে, যার মধ্যে লিপিড (চর্বি) একটি অন্যতম উপাদান এবং শরীরের জন্য অত্যাবশ্যক। লিপিডের মৌলিক উপাদান ৪টি। এ উপাদানগুলো রক্তের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট মাত্রার মধ্যে থাকে। যদি কোনো কারণে যে কোনো একটি উপাদান বেশি অথবা কম হয়, তখন-ই তাকে বলে ডিসলিপিডেমিয়া। মোটা মানুষের শরীরে চর্বি বা মেদ বেশি ফলে স্থুলতা রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং শরীরের সম্ভাব্য ওজন অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাড়তে থাকে।
বাংলাদেশের সুনামধন্য আকুপাংচার বিশেষজ্ঞ ডা. এস. এম. শহীদুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে আকুপাংচার চিকিৎসা প্রদান (Acupuncture treatment in Dhaka, Bangladesh) করে আসছেন। তার হাত ধরে দেশ ও বিদেশের অনেক রোগী সুস্থ্যতা পেয়েছেন। আকুপাংচার চিকিৎসার মাধ্যমে স্থুলতা (Obesity treatment in Dhaka, Bangladesh) এর চিকিৎসা করা যায়।
স্থুলতা কেন হয়?
স্থুলতা (Obesity) জেনেটিক, পরিবেশগত এবং জীবনযাত্রার কারণগুলির দ্বারা প্রভাবিত একটি বিস্তৃত স্বাস্থ্য সমস্যা, 30 বা তার বেশি BMI দ্বারা চিহ্নিত করা হয় এবং কার্ডিওভাসকুলার রোগ এবং ডায়াবেটিসের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে। স্থুলতা বোঝা ব্যক্তি, স্বাস্থ্যসেবা পেশাদার এবং সমাজের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি জনস্বাস্থ্য এবং মঙ্গলকে আকার দেয়।
বিজ্ঞানের আশীর্বাদে দৈনন্দিন জীবনে অনেক পরিশ্রম কমে গেছে, খাদ্যাভ্যাসে এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। উচ্চ ক্যালরিযুক্ত ‘ফাস্টফুড’ ও অন্যান্য উপাদেয় খাবার এখন বহু মানুষের পছন্দ। কোলেস্টেরল, ট্রাই গ্লিসারয়েড ইত্যাদি চর্বির মাত্রা রক্তে বেড়ে গেলে হার্টের অসুখ, স্ট্রোক, অ্যাথেরোস্ক্লোরোসিসসহ বহু অসুখের ঝুঁকি বাড়ে।
স্থুলতা নিয়ন্ত্রণ করার উপায়
একটু সতর্ক হলে রক্তে স্থুলতার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। কোলেস্টেরল, ট্রাই গ্লিসারয়েড ইত্যাদি চর্বির মাত্রা রক্তে বেড়ে গেলে হার্টের অসুখ, স্ট্রোক, অ্যাথেরোস্ক্লোরোসিসসহ বহু অসুখের ঝুঁকি বাড়ে। অথচ একটু সতর্ক হলে স্থুলতার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। কম বা পরিশ্রম না করা, মুটিয়ে যাওয়া, উপাদেয় কিন্তু অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি কারণে কিছু অসুখ বেশি হচ্ছে। যেমন ডায়াবেটিস, হূদরোগ, মস্তিষ্কের স্ট্রোক, অ্যাথেরোস্ক্লোরোসিস ইত্যাদি।
স্থুলতা কমাতে জন্য চর্বি নিয়ন্ত্রণ
স্বাভাবিক জীবন প্রক্রিয়ার জন্যই রক্তে চর্বি থাকা জরুরি। কিন্তু এগুলোর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শরীর বাঁচাতে নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় রাখা দরকার। রক্তে অনেক ধরনের উপাদান থাকে। এর মধ্যে চর্বি বা স্নেহজাতীয় উপাদানগুলোই রক্তের চর্বি বা কোলেস্টেরল নামে পরিচিত। এগুলো রক্তে যায় আমাদের গৃহীত খাদ্য থেকেই। তবে সরাসরি নয়। মূলত যকৃৎ বা লিভারে খাদ্য সংশ্লেষণের সময় এগুলো উৎপাদিত হয়।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য চারটি হচ্ছে টোটাল কোলেস্টেরল, টিজি বা ট্রাইগ্লিসারাইড, লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন এবং হাই ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন। এগুলোর আদর্শ মাত্রা সম্পর্কে একটা ধারণা দেওয়া যাক। টোটাল কোলেস্টেরল ২০০ গ্রাম/ডে.লির সমান বা এর কম, ট্রাই গ্লিসারাইড ১৫০ গ্রাম/ডে.লির সমান বা এর কম, এলডিএল ১০০ থেকে ১২৯ গ্রাম/ডে.লির মধ্যে, এইচডিএল ৪০ গ্রাম/ডে.লির সমান বা বেশি।
কোলেস্টেরল ও লো-ডেনসিটি লাইসোপ্রোটিন বা এলডিএল রক্তে অধিক থাকলে তা বেশি ক্ষতিকর, ট্রাইগ্লিসারাইডও কম থাকা ভালো। আর হাই-ডেনসিটি লাইসোপ্রোটিন বা এইচডিএল যত বেশি থাকবে তত বেশি শরীরের জন্য উপকারী।
আকুপাংচার চিকিৎসার মাধ্যমে স্থুলতা (Obesity treatment in Dhaka, Bangladesh) এর চিকিৎসা করা যায়। আকুপাংচার একটি ঔষধ বিহীন চীনা চিকিৎসা পদ্ধতি, যা বর্তমানে বাংলাদেশের ঢাকায় (Acupuncture treatment in Dhaka, Bangladesh) রয়েছে।
রক্তে অতিরিক্ত চর্বি জমে কেন?
- মূলত জীবন যাপনের ধরনই রক্তে চর্বি বাড়ার মূল কারণ।
- কম হাঁটা, বেশি বসে থাকা, অলস জীবন যাপন করা।
- অধিক চিনি, চর্বি ও তেলযুক্ত খাবার গ্রহণ
- খেলাধুলা ও ব্যায়াম না করা।
- পরিশ্রমের কাজ না করা বা পরিশ্রম করার মানসিকতা না থাকা।
- শারীরিক ওজন বৃদ্ধি।
- ডায়াবেটিস।
- নেফ্রটিক সিনড্রোম (Nephrotic Syndrome) ধরনের কিডনি রোগ।
- হরমোনজনিত রোগ কুশিং সিনড্রোম।
রক্তে অতিরিক্ত চর্বি কী ক্ষতি করে?
রক্তে প্রবাহিত অতিরিক্ত চর্বি রক্ত প্রবাহের ধমনির গায়ে লেগে যায় এবং ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। এভাবে চর্বি জমে রক্তনালিকে সরু করে দেয়। ফলে রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যায় বা রক্ত প্রবাহিত হতে বাধা পায়। যে অঙ্গে সরবরাহকারী ধমনিতে এই ব্লক বা বাধার সৃষ্টি হয়, সংশ্লিষ্ট অঙ্গটি রক্ত কম পায়। ফলে অক্সিজেন ও খাদ্য কণিকার অভাবে অঙ্গটি ধীরে ধীরে অকার্যকর হয়ে পড়তে থাকে এবং মানুষ রোগাক্রান্ত হয়।
- হৃদপিন্ডের নিজস্ব রক্তনালিতে ব্লক হয়ে অকার্যকর হয়ে পড়া বা ‘হার্ট অ্যাটাক’ হওয়া।
- মস্তিষ্কের রক্তনালিতে ব্লক হয়ে অকার্যকর হয়ে পড়া বা ‘স্ট্রোক’ হওয়া, রক্তনালি ফেটে গিয়ে মস্তিষ্কে রক্তপাত বা ব্রেন হেমোরেজ হওয়া।
- হাত-পায়ে রক্তপ্রবাহ কমে গিয়ে ঝিন ঝিন করা, অসাড় হওয়া, পচন ধরা ইত্যাদি।
- লিভারে চর্বি জমে ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হওয়া।
- পিত্তথলিতে চর্বিযুক্ত পাথর হওয়া।
- চামড়ায় চর্বি জমে জ্যামথেলেসমা হওয়া ইত্যাদি।
স্থুলতা কমানোর ঘরোয়া উপায়
অতিরিক্ত স্থুলতা শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। তাই স্থুলতা কমানোর চেষ্টা করতে হবে সব সময়। অতিরিক্ত চর্বি যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। বেশ কিছু ঘরোয়া উপায় মেনে চললে স্থুলতা কমানো যায়:
- লাল মাংস বর্জন করতে হবে
- চর্বিদার খাবার, ফাস্ট ফুড, সফট ড্রিংক্স বা কোমল পানীয় খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে
- ভাত ও আলুর পরিবর্তে যব, গম ও ভুট্টার তৈরি খাদ্য খেতে হবে
- শাক-সবজি, ফলমূল ও আঁশযুক্ত খাবার বেশি খেতে হবে
- প্রতিদিন সকাল অথবা বিকালে ৪৫ মিনিট করে হাঁটতে হবে
- শরীর থেকে ঘাম ঝড়াতে হবে, শারীরিক ও কায়িক পরিশ্রম বেশি করতে হবে
স্থুলতা রোগের চিকিৎসায় আকুপাংচার চিকিৎসা
আকুপাংচার চিকিৎসার মাধ্যমে স্থুলতা এর চিকিৎসা (Obesity treatment in Dhaka) করা যায়। আকুপাংচার আজ থেকে প্রায় ৫ হাজার বছর আগে প্রাচীন চীনে আবিষ্কৃত একটি ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসা পদ্ধতি। এই চিকিৎসা বর্তমানে সমস্ত পৃথিবীতে বহুল প্রচলিত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দ্বারা ১০০ টির ও বেশি রোগের জন্য আকুপাংচার চিকিৎসাকে সুপারিশ করা হয়েছে। আকুপাংচার শিথিলতা বাড়াতে পারে এবং চাপ কমাতে পারে, যা কিছু ব্যক্তির অতিরিক্ত খাওয়ার সাথে যুক্ত হতে পারে। এছাড়া আকুপাংচার হজমের উন্নতি করে এবং বিপাক বাড়াতে সাহায্য করে। সম্ভাব্য ওজন ব্যবস্থাপনায় সহায়তা করে। আকুপাংচারের কারণে উন্নত রক্ত সঞ্চালন অ্যাডিপোজ টিস্যু থেকে চর্বি একত্রিত করতে সাহায্য করতে পারে। এটি লক্ষ করা গুরুত্বপূর্ণ যে ওজন কমানোর জন্য আকুপাংচার সমর্থনকারী বৈজ্ঞানিক প্রমাণ সীমিত।
আকুপাংচার চিকিৎসা ও হেলদি লাইফস্টাইল দিয়ে শশী হাসপাতাল স্থুলতার চিকিৎসা (Alternative treatment in Bangladesh) দিয়ে আসছে দীর্ঘদিন বাংলাদেশে। কোন প্রকার ঔষধ ছাড়া স্থুলতার (Obesity treatment without medicine in Bangladesh) চিকিৎসা দেওয়া হয়। এই রোগের আকুপাংচার চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য ব্যক্তিরা বর্তমানে হেলদি জীবনযাপন করছে।
See More…
মাদক নির্ভরশীলতার (Tobacco Dependency) লক্ষণ এবং আকুপাংচারের ভূমিকা
চাইনিজ ফুট ট্রিটমেন্ট কেন নেব? উপকারিতা | Chinese foot treatment