এপিডেমিক হেমোরেজিক ফিভার কি? কিভাবে বুঝবেন এবং চিকিৎসা

এপিডেমিক হেমোরেজিক ফিভার / জ্বর (Epidemic Hemorrhagic Fever) সংক্রান্ত রোগের ক্ষেত্রে আকুপাংচারের ভূমিকা

জীবনে কখনো জ্বরে (এপিডেমিক হেমোরেজিক ফিভার – EHF) ভোগেননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। কারণ অসুস্থ হওয়ার একটি অন্যতম উপসর্গ হচ্ছে জ্বর। সাধারণত জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার দিন তিনেকের মধ্যে সেটি ভালও হয়ে যায় এবং এর জন্য খুব জটিল চিকিৎসার দরকার হয় না। জ্বর আসলে কোন রোগ নয়। এটি অন্য কোন রোগের লক্ষণ মাত্র। সবচেয়ে সাধারণভাবে বলা যায়, দেহে কোন জীবাণুর সংক্রমণ হলে জ্বর (এপিডেমিক হেমোরেজিক ফিভার) হতে পারে। ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ইত্যাদির আক্রমণে জ্বরে ভোগ মানুষ।

মানব শরীরের তাপমাত্রা 37°C বা 98.6°F থাকে। শরীরের তাপাত্রা 1°C বাড়লে তাকে জ্বর বলে অভিহিত করা হয়। জ্বরকে মনে করা হয় শারীরিক অসুস্থতার জন্য দায়ী প্যাথোজেন-এর বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রতিরোধী শক্তি। জ্বরের অসংখ্য কারণ আছে। খুব সাধারণ থেকে জটিল কারণ নির্ভর করে জ্বরের এজেন্ট, সময়সীমা, এবং জ্বরের প্রকারের ওপর। শরীরের বিপাকীয় প্রক্রিয়া খুবই জ্বর নির্ভর এবং কোনও ব্যক্তির তাপমাত্রা খুব কমই বেসলাইন থেকে 1°C ওঠাপড়া করে।

কোন জ্বর আসলে অবহেলা করা উচিত নয়। উপসর্গ বুঝে ব্যবস্থা নেয়া উচিত। বিশেষ করে যদি জ্বরের সাথে আরো অন্য কোন উপসর্গ থাকে এবং এক সপ্তাহর পরও সেটি ভালো না হয় তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। সেই সাথে যারা শিশু, বয়স্ক এবং ক্রনিক কোন রোগ বা আগে থেকেই স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে তাদের এ বিষয়ে আরো সচেতন হওয়া উচিত। জ্বরের সাথে ঘাড় বা শরীরের ব্যথা, উচ্চ তাপমাত্রা, বমি করা বা খাবার খেতে না পারা, তিনদিনের বেশি জ্বর থাকা, শুধু রাতে জ্বর আসা, শরীরে র‍্যাশ বের হওয়া, চোখ শুকিয়ে যাওয়া, খিচুনি হওয়া-ইত্যাদি লক্ষণ থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

Epidemic Hemorrhagic Fever জ্বর রোগটি নির্ণয়

যখন কোনও সংক্রমণ হয় বা কোনও বহিরাগত বস্তু শরীরে প্রবেশ করে স্বাভাবিক কার্যপ্রণালী ব্যাহত করে তখন জ্বর হয়। এটি কোনও অসুস্থতা নয় তবে শরীরে কোনও সংক্রমণ বা অসুস্থতার উপসর্গ। জ্বরের প্রকৃত কারণ জানা প্রয়োজন যাতে নির্দিষ্টভাবে চিকিৎসা করা সম্ভব হয়।

  • রক্ত পরীক্ষা
  • মুত্র পরীক্ষা এবং কালচার
  • গলার থুথু বা মিউকাস-এর নমুনা পরীক্ষা এবং কালচার
  • মল পরীক্ষা এবং কালচার
  • এক্স-রে (x-ray)

বাড়িতে থার্মোমিটারের সাহায্যে নিয়মিত তাপমাত্রা রেকর্ড করা হলে জ্বরের প্রকার বুঝতে সুবিধা হয়। শরীরের 4টি জায়গায় থার্মোমিটারের সাহায্যে তাপমাত্রা পরিমাপ করা যায়। সেগুলি হল: 

  • অ্যাক্সিলা (বগলের তলায়)
  • কানের পর্দা (ইয়ারড্রাম)
  • মুখের মধ্যে
  • পায়ুদেশে

আকুপাংচার হল একটি ঐতিহ্যবাহী চীনা চিকিৎসা অনুশীলন যা বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় এবং থেরাপিউটিক প্রভাবকে উদ্দীপিত করার জন্য শরীরের নির্দিষ্ট পয়েন্টগুলিতে পাতলা সূঁচ দিয়ে উদ্দীপনা তৈরি করা হয়। যদিও আকুপাংচার সাধারণত বিভিন্ন স্বাস্থ্য অবস্থার জন্য ব্যবহৃত হয়। এই সূঁই অনেক পাতলা যা শরীরের গভীরে সামান্য চাপে প্রবেশ করে এবং শরীরকে উদ্দীপিত করে।

যদিও জ্বর কোন রোগ নয়, এটি আসলে অন্য কোন রোগের উপসর্গ মাত্র।  এ রোগের ক্ষেত্রে রোগীর শরীরের ভারসাম্য এবং রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থাপনা ব্যর্থ হয় যার ফলে শরীর অধিক দুর্বল এবং কর্মক্ষমতা কমে আসে। এ অবস্থায় রোগীকে আকুপাংচার চিকিৎসা প্রদান করলে রোগীর শরীরের নার্ভের উত্তেজনা এবং শরীরের বিভিন্ন উদ্দীপিত হওয়ার ফলে শরীরের

কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি হয় এবং ব্যথাজনিত বিভিন্ন রোগের উপশম ঘটে। এছাড়া জ্বর হলে শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা যেমন কাধে ব্যথা, গলায় ব্যথা, বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে।  এ অবস্থায় আকুপাংচার চিকিৎসা প্রদানের ফলে ও শরীরবৃত্তীয় ব্যথার উপশম ঘটে এবং রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া সক্রিয় হয়ে শরীরকে আরো কর্মকম করে তোলে।

Epidemic Hemorrhagic Fever এর জন্য কিছু স্বাস্থ্য পরামর্শ

যে কারণেই জ্বর হোক, চিকিৎসকের শরণাপন্ন না হওয়া পর্যন্ত নিজেকে নিরাপদ রাখতে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. তৌফিক আহমেদ।

ঘুম বা বিশ্রামে থাকা

জ্বর হলে শরীরের ভেতরে থাকা জীবাণুর বিরুদ্ধে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা লড়াই করতে শুরু করে। এসময় শরীরকে পরিপূর্ণ বিশ্রাম দেয়া উচিত।

প্রচুর তরল পানীয় পান করা

প্রচুর পরিমাণে তরল পানি বা ফলের রস পানের মাধ্যমে শরীরের পানিশূন্যতা রোধ করা যায়। বিশেষ করে লেবুর পানি ও গরম পানি পান করা যেতে পারে।

পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ

জ্বরের সময় অরুচি ভাব তৈরি হলেও ফলমূল বা পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত। তাহলে শরীর রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো শক্তি সরবরাহ পায়।

উষ্ণ পরিবেশে থাকা

জ্বরের সময় শুষ্ক ও উষ্ণ পরিবেশে থাকতে হবে। এই সময় পরিষ্কার ও উষ্ণ পোশাক পরা উচিত। বিশেষ করে প্রসূতি বা অস্ত্রোপচারের পর অবশ্যই পরিষ্কার ও উষ্ণ কক্ষে থাকা উচিত।

এপিডেমিক হেমোরেজিক ফিভার – EHF এ ভোগেননি এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। এটি খুবই সাধারন একটি জ্বর। দেহে কোন জিবাণুর সংক্রমণ হলে এই জ্বর হয়ে থাকে। তবে সাধারনত বেশিদিন এই জ্বর স্থায়ী হয় না। ঠিকমত চিকিৎসা করলে এই জ্বর ভালো হয়ে যায়।

আকুপাংচার একটি প্রাচীন চীনা চিকিৎসা পদ্ধতি। এই মাধ্যমে কোন প্রকার ঔষধ ছাড়া চিকিৎসা করা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশের সুনামধন্য আকুপাংচার বিশেষজ্ঞ ডা. এস. এম. শহিদুল ইসলাম ঢাকায় অবস্থিত শশী হাসপাতাল (আকুপাংচার) এ চিকিৎসা প্রদান করছেন। দেশও বিদেশ থেকে বিভিন্ন রোগী বাংলাদেশে এসে আকুপাংচার চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য হয়েছেন।

ডা. এস. এম. শহীদুল ইসলাম এর ফ্রী হেলদি লাইফস্টাইল টিপস জানতে ব্লগ গুলো পড়ুন

See More…

রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের লক্ষণ, ঔষধ ছাড়া চিকিৎসা | Rheumatoid Arthritis Treatment

হাতের আঙ্গুল নীল হয়ে যাওয়ার (Raynaud Syndrome) কারণ , লক্ষণ এবং আকুপাংচার চিকিৎসা

Leave a Reply

Receive the latest news

Subscribe To My Weekly Newsletter

Get notified about new articles