প্রসব বেদনা (Labor Pain) কারণ, লক্ষণ এবং আকুপাংচার চিকিৎসা

প্রসব বেদনা (Labor Pain) কারণ, লক্ষণ এবং আকুপাংচার চিকিৎসা

সন্তান জন্ম দেওয়ার একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হলো প্রসব বেদনা (Labor Pain), যেটা শুরু হয় জরায়ুর সংকোচন ও সার্ভিকাল সম্প্রসারণ থেকে আর শেষ হয় সন্তান জন্মানোর মাধ্যমে। আপনার ডেলিভারি তারিখ যত এগিয়ে আসবে আপনি ততবেশি আপনার শরীরে কিছু পরিবর্তন দেখতে পাবেন। যেগুলো মূলত ডেলিভারি হওয়ার লক্ষণ। এরপর যত সময় যেতে থাকবে আপনার সত্যিকারের প্রসব ব্যথা শুরু হবার লক্ষণগুলো দেখা দিতে থাকবে। শিশু জন্ম নেয়ার কয়েক দিন এমনকি কয়েক ঘণ্টা আগেও এই লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

আকুপাংচার চিকিৎসার মাধ্যমে প্রসব বেদনা কমানো যায়। সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও বর্তমানে আকুপাংচার চিকিৎসা ব্যবস্থা (Acupuncture treatment in Dhaka, Bangladesh) রয়েছে। ঢাকার সেরা আকুপাংচার বিশেষজ্ঞ ডা. এস. এম. শহীদুল ইসলাম (Best Acupuncture and pain doctor in Dhaka) এর তত্বাবধানে ঢাকার একমাত্র আকুপাংচার স্পেশালাইজড হাসপাতাল, শশী হাসপাতালে ঔষধ বিহীন ব্যথার চিকিৎসা (Best pain management hospital in Dhaka, Bangladesh) সহ অন্যান্য রোগের চিকিৎসা প্রদান করে থাকে। এখানে মহিলাদের জন্য নির্দিষ্টভাবে আকুপাংচার চিকিৎসা ব্যবস্থা (Female acupuncture service center in Bangladesh) রয়েছে।

প্রসব বেদনার কেন হয়

স্বায়ুতন্ত্রে অস্বাভাবিকতা না থাকলে প্রসববেদনা অনিবার্য। সন্তান প্রসবকালে নানা কারণে ব্যথার উদ্ভব হয়ে থাকে। একজন মহিলা সন্তান প্রসবের সময় যে মাত্রার ডেলিভারি পেইন (Labor Pain) অনুভব করেন তা নির্ভর করে উনার সন্তানের আকার এবং জরায়ূ অভ্যন্তরে অবস্থান, তার নিম্নদেশের আকার, তার আবেগ, সংকোচনের শক্তি এবং সর্বোপরি তার দৃষ্টিভঙ্গির উপর। চাপা উত্তেজনা প্রসববেদনার সময় ব্যথা বৃদ্ধি করে

প্রসব বেদনার পূর্ব লক্ষণ

প্রসব বেদনার (Labor Pain) পূর্ব লক্ষণ রয়েছে যেটা দেখলে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনি এই মুহূর্তে প্রসব প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন এবং আপনার সত্যিকারের প্রসব ব্যথা উঠেছে। তবুও নিশ্চিত হওয়ার জন্য সবসময় আপনার ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

ঘনঘন জরায়ুর সংকোচন অনুভবঃ আপনার যখন সত্যিকারের প্রসব ব্যথা উঠবে তখন প্রচন্ড পেটে ব্যথা করবে এবং ব্যথাটা কিছু সময় পরপর উঠতে থাকবে, বাড়তেও থাকবে। ব্যথা ওঠার জায়গাগুলো লক্ষ্য করলেই আপনি বুঝতে পারবেন সেটা ফলস লেবার পেইন কি না।

রক্তমিশ্রিত স্রাব নিঃসরণঃ মিউকাস প্লাগ জরায়ুর মুখ আটকে রাখতে সাহায্য করে, এটা মূলত জরায়ুর মধ্যে ভ্রুণকে বাইরের জীবাণু থেকে রক্ষা করে। ডেলিভারি পেইন (Labor Pain) সময় আপনি এই মিউকাস প্লাগ বেরিয়ে আসতে দেখবেন। মিউকাস প্লাগ লম্বা আকৃতির হয় এবং প্রসবের সময় পুরোটা একসঙ্গে বেরিয়ে আসে। অনেক সময় পুরোটা একবারে না বেরিয়ে ছোট ছোট অংশও বের হতে পারে।

পেট ও পিঠের নিচের দিকে ব্যথাঃ পিরিয়ড বা মাসিকের সময়ের মতো তীব্র পেটে ব্যথা বা তলপেটে চাপ অনুভব করবেন। আপনার পিঠের নিচের অংশে ব্যথা হতে পারে যা আস্তে আস্তে পায়ে ছড়িয়ে পড়ে। আপনি নড়েচড়ে অন্যভাবে বসার বা শোয়ার চেষ্টা করলেও এই ব্যাথা দূর হবে না।

পানি ভেঙে যাওয়াঃ বেশিরভাগ মায়েদের, প্রসবের অন্যান্য লক্ষণ শুরু হওয়ার পর ঝিঁল্লি ফেটে যায় এবং এ্যামিনিওটিক তরল বের হয়। সবক্ষেত্রেই যে বড় ধরনের ঝাঁকুনি দিয়ে তরল পুরোটা একবারে পড়ে যাবে এমনটা নয়। কিছু কিছু মায়েদের ক্ষেত্রে এই তরল ফোঁটা ফোঁটা করেও পড়ে।

বেশিরভাগ মায়েদের প্রসবের সবচেয়ে বড় লক্ষণ হলো পানি ভেঙে যাওয়া। কিন্তু মাত্র ১৫% বা তারও কম শিশুর জন্মের ক্ষেত্রে এটা প্রাকৃতিকভাবে ঘটে। সুতরাং, পানি ভেঙে যাওয়াকেই প্রসবের একমাত্র চিহ্ন মনে করবেন না।

প্রসব বেদনা কমানোর উপায়

ডেলিভারি পেইন কমানোর বেশ কিছু উপায় আছে। ওষুধ ছাড়া স্বাভাবিক পদ্ধতিতে এই ব্যথা কমানোর জন্য-

১। শান্ত থাকুন এবং কম চিন্তা করুন। মানসিক অস্থিরতা ব্যথা আরও বাড়িয়ে দেয়।

২। শ্বাস নেওয়ার সঠিক প্রক্রিয়া শিখে নিন। এতে করে ব্যথা অনেকটা কমে আসবে।

৩। নিজের শারীরিক অবস্থান বদল করুন একটু পরপর।

৪। কিছু নির্দিষ্ট জিনিসের গন্ধ নিলে ব্যথা উপশম হয়। এই পদ্ধতি চেষ্টা করে দেখতে পারেন।

৫। শরীর যেন পানিশূন্য না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন। একটু একটু পানি পান করুন। ক্ষুধা পেলে হালকা খাবার খেয়ে নিন।

এছাড়াও চিকিৎসকের সাহায্যে পেথিডিন, এন্টোনোক্স গ্যাস ইত্যাদি নিয়ে ব্যথা খানিকটা কমিয়ে আনতে পারেন। প্রসবের সময় শরীরে অক্সিজেনের যেন অভাব না হয় তা নিশ্চিত করতে আপনি অক্সিজেন মাস্ক চেয়ে নিতে পারেন।

প্রসব বেদনা কমাতে আকুপাংচার চিকিৎসা

আকুপাংচার হল একটি ঐতিহ্যবাহী চীনা চিকিৎসা অনুশীলন যা বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় এবং থেরাপিউটিক প্রভাবকে উদ্দীপিত করার জন্য শরীরের নির্দিষ্ট পয়েন্টগুলিতে পাতলা সূঁচ দিয়ে উদ্দীপনা তৈরি করা হয়। আকুপাংচার সাধারণত বিভিন্ন স্বাস্থ্য অবস্থার জন্য ব্যবহৃত হয়। এই সূঁই অনেক পাতলা যা শরীরের গভীরে সামান্য চাপে প্রবেশ করে এবং শরীরকে উদ্দীপিত করে। আকুপাংচারের প্রতিক্রিয়া ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে পরিবর্তিত হতে পারে। জীবনধারা পরিবর্তন এবং খাদ্যতালিকাগত পরিবর্তনের সাথে সাথে আকুপাংচার চিকিৎসা গ্রহণের ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং নার্ভের জটিলতা দূর করে।

প্রসবকালীন ব্যথা কমাতে পরিমিত জীবনযাপনের পাশাপাশি চিকিৎসা আকুপাংচার চিকিৎসা একটি গুরুত্বপূর্ণ পথ্য হতে পারে। এক্ষেত্রে আলোচনার বিষয় হচ্ছে আকুপাংচার কিভাবে প্রসবকালীন ব্যথা কমাতে সহায়তা করবে ? আকুপাংচার শরীরের ভেতরে এক ধরনের উদ্দীপনা সৃষ্টি করে, যার ফলে নার্ভের সংকোচন এবং প্রসারণ ঘটে এবং শরীরবৃত্তীয় বিভিন্ন ব্যথা কার্যকারে  বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

মহিলারা যদি গর্ভাবস্থায় শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যাথা অনুভূত হয়।  যেমন কোমর ব্যথা, জয়েন্টে ব্যথা ইত্যাদি। এ সমস্ত ব্যাথার নিরাময়ের ক্ষেত্রে আকুপাংচার চিকিৎসা একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে পারে। নিয়মিত আকুপাংচার চিকিৎসা গ্রহণের ফলে শরীরের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং একজন গর্ভবতী মহিলাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে  প্রস্তুত করে তোলে। যার ফলে তার শরীরের কার্যক্রম সঠিকভাবে চলে এবং কোন ওষুধের প্রয়োজন হয় না।

অতিরিক্ত ওষুধ গ্রহণ গর্ভবতী মহিলাদের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। এ অবস্থায় শারীরিক কার্যকলাপ আরো সুন্দরভাবে পরিচালনা করার জন্য আকুপাংচার চিকিৎসাটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আকুপাংচার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কে আর উন্নত করে এবং শরীরকে আরো কর্মক্ষম করে তোলে। যার ফলে ছোটখাটো অনেক রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে পারে না। গর্ভাবস্থায় একজন নারীর সুস্থতা সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আকুপাংচার চিকিৎসা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে এবং শরীরকে আরও বেশি সতেজ ও কর্মক্ষম রাখতে সহায়তা করে।

আরো কিছু বৈশিষ্ট্য 

বৈজ্ঞানিক প্রমাণঃ প্রসব ব্যথা কমানোর জন্য আকুপাংচারের কার্যকারিতার বৈজ্ঞানিক প্রমাণ রয়েছে। কিছু গবেষণা দেখা যায়, আকুপাংচার প্রসবের সময় ব্যথা এবং উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে।

ব্যক্তিগত প্রতিক্রিয়া পরিবর্তিত হয়ঃ আকুপাংচারের প্রতিক্রিয়া ব্যক্তিদের মধ্যে পরিবর্তিত হতে পারে। কিছু মহিলা আকুপাংচারের মাধ্যমে প্রসব ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে পারেন, অন্যরা একই সুবিধা অনুভব করতে পারে না। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সাথে আকুপাংচার চিকিৎসার একটি অভূতপূর্ব মিল রয়েছে। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যে সকল ব্যক্তির শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি আকুপাংচার চিকিৎসাটি তাদের জন্য আরও বেশি সুফল বয়ে নিয়ে আসে।

নিরাপত্তা বিবেচনাঃ আকুপাংচার চিকিৎসাটি যোগ্য অনুশীলনকারীদের দ্বারা সঞ্চালিত হয়। গর্ভাবস্থায় কোনো পরিপূরক বা বিকল্প থেরাপি নেওয়ার আগে আপনার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর সাথে পরামর্শ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিশ্চিত করুন যে আপনার আকুপাংচার বিশেষজ্ঞ গর্ভবতী মহিলাদের সাথে কাজ করার ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ কি না।

আকুপাংচারের সময়ঃ আপনি যদি প্রসব ব্যথার জন্য আকুপাংচার বিবেচনা করছেন, তাহলে আপনার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর সাথে সেশনের সময় নিয়ে আলোচনা করা অপরিহার্য। আকুপাংচার প্রসবের পূর্ববর্তী সপ্তাহগুলিতে, প্রারম্ভিক প্রসবের সময় বা নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে সক্রিয় শ্রমের সময় সঞ্চালিত হতে পারে। এক্ষেত্রে আপনার একজন অভিজ্ঞ আকুপাংচার বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে এবং পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

বাংলাদেশের সুনামধন্য আকুপাংচার বিশেষজ্ঞ ডা. এস. এম. শহীদুল ইসলাম এর (Best pain doctor in Bangladesh) তত্বাবধানে ঔষধ বিহীন ব্যাথার চিকিৎসা করে অসংখ্য রোগী সুস্থ্য হয়েছেন। আকুপাংচার একটি ঔষধ বিহীন চিকিৎসা পদ্ধতি। প্রাচীন যুগ থেকে চীনে এই চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু রয়েছে। যার প্রসার সারা বিশ্বে ছড়িয়ে গিয়েছে। যার সাথে তাল মিলিয়ে ঢাকায় অবস্থিত আকুপাংচার স্পেশালাইজড হাসপাতাল, শশী হাসপাতালে এই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। এখানে মহিলাদের জন্য নির্দিষ্টভাবে আকুপাংচার চিকিৎসা ব্যবস্থা (Female acupuncture service center in Bangladesh) রয়েছে।

See More…

ঔষধ ছাড়াই PLID, Back Pain এর স্থায়ী সমাধান | Acupuncture Treatment

গর্ভাবস্থায় বাচ্চার অবস্থান (Malposition of the Fetus) এবং আকুপাংচার চিকিৎসা

Leave a Reply

Receive the latest news

Subscribe To My Weekly Newsletter

Get notified about new articles