প্রোস্টাটাইটিস কেন হয় (Prostatitis)
প্রোস্টাটাইটিস হল পুরুষদের আখরোট আকৃটির গ্রন্থি যা পুরুষ প্রজনন ব্যবস্থার একটি অংশ। আর প্রোস্টাইটিস হচ্ছে পুরুষের প্রোস্টেট গ্রন্থির একটি ব্যাধি। প্রোস্টাইটিস হলে ঘন ঘন প্রস্রাব, পিঠে ব্যথা, জ্বর ও ব্যথার সমস্যা দেখা দেয়। এটি আবার যৌনাঙ্গে ও প্রভাবিত করতে পারে। যৌনাঙ্গে প্রভাবিত হওয়ার ফলে ইরেক্টাইল ডিসপাংশন (Erectile dysfunction) হওয়ার সম্ভাবনা তাকে।
আকুপাংচার চিকিৎসার মাধ্যমে প্রোস্টাটাইটিস এর চিকিৎসা করা যায়। আকুপাংচার একটি প্রাচীন চীনা পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে কোন প্রকার ঔষধের ব্যবহার করা হয় না। বাংলাদেশের অন্যতম আকুপাংচার বিশেষজ্ঞ ডা. এস. এম. শহীদুল ইসলাম এর থেকে চিকিৎসা গ্রহন করে সুস্থ্য হয়েছেন দেশ ও বিদেশের অনেক রোগী।
প্রোস্টাটাইটিস এর ধরন
প্রোস্টাটাইটিস এর বেশ কয়েকটি ধরণ রয়েছে, সেগুলো নিচে দেওয়া হল:
- তীব্র ব্যাকটেরিয়াল প্রোস্টাটাইটিস
- দীর্ঘস্থায়ী ব্যাকটেরিয়াল প্রোস্টাটাইটিস
- ক্রনিক প্রোস্টাটাইটিস/দীর্ঘস্থায়ী পেলভিক পেইন সিন্ড্রোম
- উপসর্গবিহীন প্রদাহজনক প্রস্টেটাইটিস
প্রোস্টাটাইটিস এর লক্ষণ
প্রোস্টাটাইটিস এর ব্যাধির ধরণ অনুসারে লক্ষণসমূহ হতে পারে। তার মধ্যে কিছু লক্ষণ রয়েছে সেগুলো হলো:
- ঘন ঘন প্রস্রাব
- প্রস্রাব করার সময় ব্যথা
- প্রস্রাব করতে অসুবিধা
- প্রস্রাবের সাথে রক্ত
- পেটে বা কুঁচকিতে ব্যথা (Abdomen pain)
- জ্বর
- সহবাসের সময় ব্যথা
- যৌন সমস্যা/ইরেক্টাইল ডিসপাংশন (Erectile dysfunction)
প্রোস্টাটাইটিস হওয়ার কারণ
যেসব কারণে প্রোস্টাটাইটিস হতে পারে নিম্নে তার কিছু কারণ হলো:
- অটোইমিউন রোগ (Autoimmune disease)
- মানসিক চাপ (Stress)
- প্রস্রাবের সংক্রমণ (Urine Infection)
- মূত্রাশয়ে পাথর
- প্রস্টেটে পাথর
- দীর্ঘসময় প্রস্রাব আটকে রাখা
প্রোস্টাটাইটিস রোগ নিরাময়ে আকুপাংচারের ভূমিকা
আকুপাংচার হল একটি ঐতিহ্যবাহী চীনা চিকিৎসা যা শরীরের ব্যথা উপশম করতে এবং শরীরের শক্তি প্রবাহে (কিউই) ভারসাম্য পুনরুদ্ধার করতে ব্যবহার করা হয়। যদিও আকুপাংচার বিস্তৃত চিকিৎসা অবস্থার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে, তবে প্রোস্টেট গ্রন্থির একটি প্রদাহজনক অবস্থা, প্রস্টাটাইটিসের চিকিৎসায় এর ভূমিকা রয়েছে
প্রোস্টাটাইটিস চিকিৎসায় আকুপাংচারের ভূমিকা নিম্নলিখিত
ব্যথা উপশম: আকুপাংচার প্রস্টাটাইটিসের সাথে যুক্ত ব্যথা এবং অস্বস্তি কমাতে সাহায্য করে। নির্দিষ্ট আকুপাংচার পয়েন্টগুলিকে উদ্দীপিত করে, এটি শরীরে এন্ডোরফিন এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক ব্যথা উপশমকারী রাসায়নিকের মুক্তিকে ট্রিগার করে বলে মনে করা হয়। এটি প্রায়শই প্রস্টাটাইটিসের সাথে থাকা ব্যথা থেকে সাময়িক ত্রাণ প্রদান করে।
প্রদাহ হ্রাস: আকুপাংচার চিকিৎসায় প্রদাহ-বিরোধী প্রভাব থাকে। নির্দিষ্ট আকুপাংচার পয়েন্টগুলিকে লক্ষ্য করে, এটি বিশ্বাস করা হয় যে আকুপাংচার শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং প্রদাহ কমাতে পারে, যা প্রোস্টাটাইটিস একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য।
উন্নত রক্ত সঞ্চালন: আকুপাংচার শরীরের মধ্যে এক ধরণের উদ্দীপনা তৈরী করে যা শরীরের স্নায়ু সরবরাহ বৃদ্ধি করে এবং কোষকে আরো সতেজ করে তোলে। আকুপাংচারের ফলে তা উক্ত স্থানগুলোকে আরো সক্রিয় করে এবং রক্তনালীর বাধাজনিত প্রবাহ সংক্রান্ত উপশমকারী হিসাবে কাজ করে। বর্তমানে উন্নত বিশ্বে এই আকুপাংচার একটি যুগান্তকারী চিকিৎসা পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এবং বর্তমানে এটি বহুল প্রচলিত একটি চিকিৎসা পদ্ধতি।
ইমিউন সিস্টেম: আকুপাংচার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। একটি শক্তিশালী ইমিউন প্রতিক্রিয়া সম্ভাব্যভাবে শরীরকে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
প্রোস্টাটাইটিস আক্রান্ত কিছু ব্যক্তি আকুপাংচারের পরে তাদের উপসর্গগুলি থেকে ত্রাণ অনুভব করছেন বলে রিপোর্ট করেন। প্রস্টাটাইটিস হল একটি জটিল অবস্থা যার মধ্যে বিভিন্ন উপপ্রকার রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে তীব্র ব্যাকটেরিয়াল প্রস্টাটাইটিস, ক্রনিক ব্যাকটেরিয়াল প্রস্টাটাইটিস এবং ক্রনিক ননব্যাকটেরিয়াল প্রস্টাটাইটিস ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এই উপপ্রকারগুলির অন্তর্নিহিত কারণ এবং প্রক্রিয়াগুলি পৃথক হলেও আকুপাংচার চিকিৎসায় এ সমস্ত রোগের ভালো সুফল পাওয়া যায়।
See More…
আকুপাংচার চিকিৎসায় বিনা ঔষধে আইবিএস (IBS- Irritable bowel syndrome) সমস্যা থেকে চিরস্থায়ী মুক্তি