রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস কি?
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা বাত ব্যথা এক ধরনের দীর্ঘস্থায়ী বাতের ব্যথা। অটোইমিউন রোগগুলি শরীরের ইমিউন সিস্টেমের নিজস্ব কোষকে আক্রমণ করার কারণে ঘটে। এই রোগে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিকমতো কাজ করে না যার কারণে এক বা একাধিক অঙ্গ বা জয়েন্টে সমস্যা হতে পারে। সেই জয়েন্টে প্রদাহ হলে অনেক ব্যথা হয়। অনেক বিজ্ঞানী বিশ্বাস করেন যে কোনো কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়লে এই রোগ হয়।
আকুপাংচার চিকিৎসার মাধ্যমে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা বাত ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এই চিকিৎসা মাধ্যমে কোন প্রকার ঔষধ ছাড়ারিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা বাত ব্যথা ভালো হয়। বাংলাদেশের সেরা আকুপাংচার চিকিৎসক ডা. এস. এম. শহীদুল ইসলাম এর তত্বাবধানে ঢাকার শশী হাসপাতালে আকুপাংচার চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। এ চিকিৎসা নিয়ে ইতিমধ্যে অনেকেই সম্পূর্ণ রূপে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা বাত ব্যথা থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা বাত ব্যথা কেন হয় ?
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস এর অন্যতম কারণ বয়সবৃদ্ধি। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তরুণাস্থিতে পানির পরিমাণ বাড়তে থাকে এবং প্রোটিনের পরিমাণ কমতে থাকে। সেজন্য তরুণাস্থিও ক্ষয় হতে থাকে। শারীরিক ওজন বেশি থাকলে বিভিন্ন জয়েন্টের ওপর বেশি চাপ পড়ার কারণে এ রোগ হতে পারে।
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা বাত ব্যথা এর সাধারণ লক্ষণ
- ঘুম থেকে ওঠার পর অস্থিসন্ধিসহ শরীরের কিছু অংশে ব্যথা ও জড়তা থাকে।
- হাতের আঙুল, কনুই, কাঁধ, হাঁটু, গোড়ালি ও পায়ের পাতায় বেশি সমস্যা হয়।
- সাধারণত শরীরের উভয় পাশ একসঙ্গে আক্রান্ত হয়। যেমন- হাতে হলে দুই হাতের জয়েন্টই একসঙ্গে ব্যথা করে, ফুলে যায় ইত্যাদি।
- শরীর দুর্বল লাগে, জ্বরজ্বর অনুভূতি হয়। ম্যাজম্যাজ করে।
- কারো কারো ক্ষেত্রে ত্বকের নিচে এক ধরনের গুটি দেখা যায়, যা ধরলে ব্যথা পাওয়া যায় না।
বেদনাদায়ক অবস্থাটা হাত ও পায়ে কোন জায়গাকেই একসাথে প্রভাবিত করে এটা ৩০ বছরের পরে শুরু হতে পারে এবং পুরুষদের থেকে মহিলাদের বেশি হয়ে থাকে। কখনো কখনো ব্যথা এবং ক্লান্তি প্রদাহের সাথে হঠাৎ করে অবস্থা আরো খারাপ করে তুলতে পারে।
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা বাত ব্যথা এর ক্ষেত্রে যে কয়েকটি ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন
- টেবিলে বসে ঝুঁকে পড়াশোনা করবেন না।
- নরম গদি-তোশক এবং উঁচু বালিশ বেশি ব্যবহার করবেন না।
- দেহের মেদ কমান-পুষ্টিকর খাবার খান।
- টেনশন কমান।
- প্রতিদিনই হালকা কিছু ব্যায়াম করুন।
- নিয়মিত কায়িক পরিশ্রম করুন।
- শীতকালে ঠাণ্ডায় এবং বর্ষায় স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় বয়স্করা সাবধানে থাকবেন।
- চিকিৎসকের পরামর্শ মতো দৈনন্দিন জীবনযাপন এবং ওষুধ সেবন করবেন।
- স্বাস্থ্যবান সুখী মানুষ কখনও অতীত বা ভবিষ্যতে বসবাস করে না। সে সব সময়ই বাস করে বর্তমানে।
- প্রার্থনা রোগের উপসর্গ কমায় এবং সুস্থতার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা বাত ব্যথা প্রতিরোধের উপায়ঃ
বেদনানাশক ওষুধ সেবনই রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস চিকিৎসার মূল কথা নয়। অনেক সময় অর্থপেডিক (হাড় ও জোড়া রোগ বিশেষজ্ঞ) সার্জন, নিউরোমেডিসিন ও নিউরোসার্জনের পরামর্শের প্রয়োজন হয়। ক্রনিক বা দীর্ঘমেয়াদি অল্প অল্প ব্যথা থেকে পরে তীব্র ব্যথা হতে পারে। অন্যান্য ছোট ছোট হাতের গিরা, পায়ের গিরা বা জয়েন্ট ফুলে গিয়ে যন্ত্রণা শুরু হয়। রোগের বর্ণনা থেকেই রোগ নির্ণয় করা যায়।
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা বাত ব্যথা নিয়ে সুস্থ থাকার কিছু উপায়ঃ
- যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
- আপনার রোগের ধরন এবং নিরাময় সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন।
- ব্যথার ওষুধ বেশি ব্যবহার না করে জীবনযাত্রার মান পরিবর্তন করুন।
- মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকুন।
- অতিরিক্ত বিশ্রামের পরিবর্তে কাজে ব্যস্ত থাকার চেষ্টা করুন।
- ব্যায়াম করাকে একটি নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত করুন।
- অবসর সময় প্রিয়জনের সঙ্গে অতিবাহিত করুন।
সর্বোপরি আছে এক এক অঙ্গের জন্য ভিন্ন ভিন্ন প্রকারের ব্যায়াম। আপনার যদি কোমর ব্যথা হয় তার জন্য এক ধরনের ব্যায়াম, যদি ঘাড় ব্যথা হয় তার জন্য এক ধরনের ব্যায়াম, যা কিনা রোগের ধরন ও প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে দেয়া হয়। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসায় ব্যায়ামের গুরুত্ব অপরিহার্য। আর্থ্রাইটিস যে কারণের জন্য হয়েছে সে কারণকে রোগ নির্ণয় পূর্বক চিকিৎসা করা হলে সফলতা পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
চিকিৎসার পূর্বশর্ত রোগ নির্ণয় করা, রোগ নির্ণয়ের পূর্বশর্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা। দৈনন্দিন জীবনে যে জিনিসগুলো মেনে চলবেন, কীভাবে বসে কাজ করবেন? কীভাবে গাড়ি চালাবেন? কীভাবে বালিশে শোবেন? ঘরবাড়ির কাজে করণীয়, ভারি জিনিস তোলার সময় সতর্কতা, সেলুনে ম্যাসাজ একেবারেই নিষেধ, হাইহিল বিপত্তি, জুতোর ফিতে বাঁধবেন কীভাবে? শিশুকে কোলে নেবেন কিভাবে, বিছানার তোশক কেমন হওয়া উচিত?
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা বাত ব্যথা প্রতিরোধে আকুপাংচারের ভূমিকাঃ
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস সিন্ড্রোমের ব্যথা সাময়িকভাবে উপশমের জন্য বিভিন্ন ব্যথা উপশমকারী রয়েছে। বিভিন্ন ধরনের ফিজিওথেরাপি কৌশল রয়েছে যা তাৎক্ষণিক ব্যথা উপশম করতে পারে। যাইহোক, শুধুমাত্র ওষুধ দিয়ে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস সম্পূর্ণভাবে নিরাময় করা অসম্ভব। এই ওষুধটি ব্যথা থেকে কিছুটা উপশম দেবে, তবে এটি স্থায়ী সমাধান নয়।
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস সিন্ড্রোমের চিকিৎসার জন্য নতুন পদ্ধতি – আকুপাংচার। আকুপাংচার, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস রোগ সম্পূর্ণরূপে নিরাময়ে সাহায্য করে। ডাক্তাররা দেখেছেন যে আকুপাংচার রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস সিন্ড্রোমের চিকিৎসায় খুব সহায়ক হতে পারে। গবেষণা অনুসারে। আকুপাংচার সূঁচ শরীরের বিভিন্ন অংশকে উদ্দীপিত করে ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করে। এটি ব্যথা উপশমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস রোগের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন আকুপাংচার চিকিৎসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বাংলাদেশ তেমনই একটি প্রতিষ্ঠান হল শশী হাসপাতাল। যেখানে প্রধান চিকিৎসা ব্যবস্থা হল আকুপাংচার । আকুপাংচার এর মাধ্যমেরিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস ব্যথার চিকিৎসা দেওয়া হয় শশী হাসপাতালে। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস রোগের চিকিৎসায় শশী হাসপাতালের সফলতার হার শতকরা ৯০ থেকে ৯৫%।
শশী হাসপাতাল দীর্ঘদিন ধরে আকুপাংচার সেবা দিয়ে আসছে। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস ছাড়াও, আকুপাংচার অন্যান্য অনেক ব্যথা-সম্পর্কিত অবস্থার চিকিৎসার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আকুপাংচার হল একটি ঐতিহ্যবাহী চীনা চিকিৎসা ব্যবস্থা যা শক্তি প্রবাহ এবং ভারসাম্যের নীতির উপর ভিত্তি করে।
৫০০০ বছরেরও বেশি সময় আগের চিকিৎসা পদ্ধতি মানব ইতিহাসের অন্যতম প্রাচীন বলে মনে করা হয়। শশী হাসপাতাল দীর্ঘদিন ধরে আকুপাংচার নামে একটি চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে এবং আকুপাংচার সেবাই শশী হাসপাতাল একটি বহুল প্রচলিত নাম । এখানে আকুপাংচার চিকিৎসা রোগীদের জন্য বিশেষভাবে ব্যবহৃত হয় । আকুপাংচার সেবায় শশী হাসপাতাল এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে।
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা বাত ব্যথা রোগে আকুপাংচার চিকিৎসা ও প্রতিকার
স্বল্পমেয়াদী ব্যথা কমানোর বিভিন্ন উপায় আছে, যেমন ওষুধ সেবন, তবে এমন বিভিন্ন কৌশলও রয়েছে যা তাৎক্ষণিক ব্যথা উপশম করতে পারে। আকুপাংচার ছাড়াও, শশী হাসপাতাল ফিজিওথেরাপি, অকুপেশনাল থেরাপি, চাইনিজ ফুট থেরাপি এবং বিভিন্ন যন্ত্রের মাধ্যমে ব্যথাজনিত রোগের সুচিকিৎসা প্রদান করা হয়ে থাকে।
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আকুপাংচার একটি অত্যন্ত কার্যকরী চিকিৎসা হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। আকুপাংচার হল ফুসফুসের কার্যকারিতা উন্নত করার এবং শরীরকে আরও দক্ষতার সাথে কাজ করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আকুপাংচার শরীরে উদ্দীপনা তৈরি করতে পারে যা স্বাস্থ্যের উন্নতিতে আবশ্যক । নতুন উদ্দীপনা শরীরের প্রভাবিত এলাকায় ব্যথা কমাতে সাহায্য করে, এবং এটি শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণভাবে কমে যায়।
আকুপাংচারের কোনো পরিচিত নেতিবাচক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই, যা বিকল্প চিকিৎসা হিসেবে ব্যবহার করার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। আকুপাংচার হল একটি চিকিৎসা পদ্ধতি যা শরীরের নির্দিষ্ট অংশকে লক্ষ্য করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি রোগীর নির্দিষ্ট চাহিদার উপর ভিত্তি করে। আকুপাংচার পদ্ধতি বিশেষভাবে রোগীর পৃথক কশেরুকার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
বাংলাদেশের অনেক আকুপাংচার ক্লিনিকের মধ্যে শশী হাসপাতাল তার উচ্চমানের যত্নের জন্য পরিচিত। শশী হাসপাতাল হল শান্তিনগর চৌরাস্তার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত, যেখানে বেশ কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় হাসপাতাল রয়েছে। শশী হাসপাতাল আকুপাংচার চিকিৎসা সেবার জন্য বাংলাদেশে বহুল প্রচলিত একটি হাসপাতাল। যেখানে আপনি ব্যথাজনিত যেকোনো সমস্যা নিয়ে আসতে পারেন। এখানে ব্যথাজনিত সকল সমস্যার জন্য আকুপাংচার চিকিৎসা পদ্ধতি খুব সুন্দর ভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এই অনুশীলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিশিষ্ট আকুপাংচার বিশেষজ্ঞ ডা. এস ,এম, শহীদুল ইসলাম।
Frequently Asked Questions (FAQ)
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস কি ভালো হয়?
বাতে ব্যথাকে মূলত রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বলা হয়। সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে বাতের ব্যথা ভালো হয়। বাতের ব্যথার জন্য আকুপাংচার চিকিৎসা একটি কার্যকরী পদ্ধতি। আকুপাংচার মূলত একটি চীনা চিকিৎসা পদ্ধতি। এই পদ্ধততে কোন প্রকার ঔষধ ছাড়া বাত ব্যথার চিকিৎসা সম্পূর্ণ রূপে ভাল হয়।
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস কেন হয়?
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস এর অন্যতম কারণ বয়সবৃদ্ধি। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তরুণাস্থিতে পানির পরিমাণ বাড়তে থাকে এবং প্রোটিনের পরিমাণ কমতে থাকে। সেজন্য তরুণাস্থিও ক্ষয় হতে থাকে। শারীরিক ওজন বেশি থাকলে বিভিন্ন জয়েন্টের ওপর বেশি চাপ পড়ার কারণে এ রোগ হতে পারে।
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস এর লক্ষণ কি?
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা বাত ব্যথার অনেক লক্ষণ রয়েছে এর মধ্যে অন্যতম হল: ঘুম থেকে ওঠার পর অস্থিসন্ধিসহ শরীরের কিছু অংশে ব্যথা ও জড়তা থাকে,
হাতের জয়েন্টে একসঙ্গে ব্যথা করে, ফুলে যায়, গোড়ালি ও পায়ের পাতায় ব্যথা করা ইত্যাদি।
বাত ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা কি?
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা বাত ব্যথা থেকে ঘরোয়া কিছু উপায়ে ভালো থাকা যায় সেগুলো হল: জয়েন্টে ব্যথা হলে উষ্ণ পোশাক পড়ুন, পর্যাপ্ত পানি পান করুন, নিয়মিত ব্যায়াম করুন, গরম সেঁক দেওয়া, গোসলের সময় গরম পানি ব্যবহার করা ইত্যাদি।
See More…
দাঁত ব্যথা (Toothache) এর কারণ, লক্ষণ এবং চিকিৎসা
শ্বাসকষ্ট সমস্যা ও ঘুমের সমস্যার প্রাকৃতিক চিকিৎসা এখন শশী হাসপাতালে