বাচ্চাদের অপারেশন পরবর্তী জটিলতা (Postextubation in Children) কি?
মাতৃত্ব একজন নারীর জীবনে আনে পরিপূর্ণতা। প্রত্যেকটি মা-ই চায় তাঁর সন্তানটি যেন নিরাপদে পৃথিবীর আলো দেখে। আর সে যেন তাকে সুস্থভাবে দিতে পারে সঠিক সেবা। সিজারিয়ান সেকশন অন্যতম একটি নিরাপদ ও জনপ্রিয় ডেলিভারি পদ্ধতি। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে মা ও বাচ্চাদের অপারেশন পরবর্তী জটিলতা দেখা দেয়। যা কোন কোন সময়ে দুজনের জন্যই মারাত্মক হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বাচ্চাদের অপারেশন পরবর্তী জটিলতা এমন একটি অবস্থা যা দৈনন্দিন জীবনযাপনের উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। বাচ্চাদের অপারেশন পরবর্তী জটিলতা বেশি সময় ধরে থাকে এবং এটি একটি গুরুতর আকার।
মা ও শিশুর ক্ষেত্রে যে সব সিজার পরবর্তী জটিলতা দেখা যায়
- স্থুলতা
- বাচ্চার আকার
- জরুরি জটিলতা যখন দ্রুত সিজারিয়ান ডেলিভারি প্রয়োজন হয়
- সার্জারি
- একাধিক সন্তান থাকা
- কিছু ওষুধের প্রতি প্রতিক্রিয়া
- গর্ভকালীন সময়ে রক্তের অভাব
- প্রি-ম্যাচিউর প্রসব বেদনা
- ডায়াবেটিস
সিজারিয়ান ডেলিভারি-এর পর সংক্রমণ
১) এন্ডোমেট্রাইটি্স (Endometritis)
এই ধরনের অপারেশন-এর পরে ইউটেরাস (Uterus) ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি দেখা দেয়। যদি সিজারিয়ান সেকশন-এর পর ব্যাকটেরিয়া ইউটেরাস-এ যে ইনফেকশন বা সংক্রমণ-এর সৃষ্টি করে তাকে মেডিকেল-এর ভাষায় বলা হয় এন্ডোমেট্রাইটি্স (Endometritis)।
২) পোস্ট সিজারিয়ান ইনফেকশন
এই অপারেশন-এর পর শুধুমাত্র যে ইউটেরাস-এই ইনফেকশন-এর সম্ভাবনা থাকে তা না, বাইরের চামড়ার স্তরেও অনেক সময় এটা দেখা দেয়। একে প্রায়ই বলা হয় পোস্ট সিজারিয়ান ইনফেকশন । জ্বর, পেটে ব্যথাও এর সাথে দেখা দিতে পারে। চামড়ার বা টিস্যুর অন্য যে কোন স্তরের ইনফেকশন সাধারণত অ্যান্টি-বায়োটিক দিয়ে সারানো হয়।কিন্তু যদি এই ধরনের ক্ষত খুব দ্রুত সারানো না হয়, তবে সেটা সহজেই ঘা বা পুঁজ-এর সৃষ্টি করতে পারে
৩) রক্তপাত
৪) রক্ত জমাট বাঁধা
৫) ওষুধে প্রতিক্রিয়া
৬) পরবর্তী সন্তান ধারণে জটিলতা
শিশুর ক্ষেত্রে ঝুঁকিসমূহ
মা ছাড়াও শিশুদের ক্ষেত্রে অনেক জটিলতার সৃষ্টি হয়। নিচের জটিলতাগুলো শিশুর শরীরে অনেক বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। যেমনঃ
- কম বয়সী মায়ের অপরিণত শিশুর জন্মদান
- শ্বাসকষ্ট
- কম ওজন ও আকারের শিশু
- মায়ের দীর্ঘমেয়াদী অপুষ্টি
- শিশুর দীর্ঘমেয়াদী অপুষ্টি ও স্বাস্থ্যহানি
- ইনফেকশন
বাচ্চাদের অপারেশন পরবর্তী জটিলতা রোগের চিকিৎসায় আকুপাংচারের ভুমিকাঃ
আকুপাংচার আজ থেকে প্রায় ৫ হাজার বছর আগে প্রাচীন চীনে আবিষ্কৃত একটি ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসা পদ্ধতি। এই চিকিৎসা বর্তমানে সমস্ত পৃথিবীতে বহুল প্রচলিত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দ্বারা ১০০ টির ও বেশি রোগের জন্য আকুপাংচার চিকিৎসাকে সুপারিশ করা হয়েছে। আকুপাংচার যেকোনো ব্যথা সমস্যার সমাধান দেয়। যার চিকিৎসা দেওয়া হয় সূক্ষ্ম সুচের মাধ্যমে। আকুপাংচার দেওয়ার ফলে শরীর উদ্দীপ্ত হয়, ব্যথা উপশম করে, প্রদাহ কমায়, রক্ত চলাচলে বৃদ্ধি ঘটে, অবসন্নতা দূর করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। গবেষণা অনুসারে আকুপাংচার সূঁচ শরীরের বিভিন্ন অংশকে উদ্দীপিত করে ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করে। এটি ব্যথা উপশমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আকুপাংচার শরীরের শক্তি প্রবাহ বা “কিউই” ভারসাম্য বজায় রাখে এবং সম্ভাব্য ভারসাম্যহীনতা মোকাবেলা করে হরমোন এবং নিউরোট্রান্সমিটারকে প্রভাবিত করতে সাহায্য করে।
আকুপাংচার বাচ্চাদের অপারেশন পরবর্তী জটিলতা ও তাঁর চাপ কমাতে পারে। এছাড়া এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, আকুপাংচার শরীরের বিভিন্ন অংশের মধ্যে এক ধরণের উদ্দীপনা তৈরী করে। যার কারণে বাচ্চাদের অপারেশন পরবর্তী জটিলতা ও ব্যথাযুক্ত স্থান গুলির মধ্যে নতুন করে উদ্দীপনা তৈরী হয় এবং ব্যথা ধীরে ধীরে প্রশমিত হতে থাকে। সুতরাং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত আকুপাংচার বাচ্চাদের অপারেশন পরবর্তী জটিলতার বিকল্প চিকিৎসা ব্যবস্থা হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে বহু বছর ধরে। আকুপাংচার চিকিৎসার মূল ভিত্তি হলো শরীরের মাংসপেশি, ব্লাড ভেসেল, রক্তনালী, ইত্যাদি। আকুপাংচার পদ্ধতিতে রোগীর কশেরুকার যে লেভেলে সমস্যা আছে, আকুপাংচার পদ্ধতিটি সেই স্থানের আশেপাশে অবস্থিত চ্যানেলগুলোকে এর মাধ্যমে ইলেকট্রিক শক দিয়ে উদ্দীপিত করে। এতে সেই স্থানে রক্ত চলাচল বাড়ে এবং বিভিন্ন রকম হরমোন নিঃসরণ হয়। এর ফলে উক্ত স্থানের ব্যথা উপশম হতে থাকে। এছাড়া বাচ্চাদের অপারেশন পরবর্তী জটিলতা সহ আরো বিভিন্ন ব্যথা ও নার্ভ জনিত সমস্যার ক্ষেত্রে আকুপা চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
See More…
হাতে পায়ে অবস ভাব ও প্যারালাইসিসের জটিলতা মোকাবেলায় আকুপাংচারের অভূতপূর্ব সাফল্য |
বর্ণান্ধতার (Color Blindness) কারণ, লক্ষণ এবং আকুপাংচার চিকিৎসা